বিএনপির দ্বন্দ্বে পরিবেশ বিঘ্নের শঙ্কায় আ.লীগ
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে বিএনপির অন্তর্দ্বন্দ্বে সুবিধা নেওয়ার কথা থাকলেও উল্টো নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছে আওয়ামী লীগ। শনিবার সকালে গণসংযোগকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, নির্বাচনে উৎসবের যে আমেজ থাকে, সেটি নষ্ট করছে বিএনপি। পুরো পরিবেশকে তারা থমথমে করে তুলেছে। তাদের এক প্রার্থী অন্য প্রার্থীকে হুমকি দিচ্ছেন বলে শুনেছি। এটি সংঘাতে রূপ নিলে অত্যন্ত দুঃখজনক হবে। তাদের দ্বন্দ্বের কারণে আমরা নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে আছি। নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন যেন এদিকে নজর রাখেন।
বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীকে প্রত্যাখ্যান করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। এ জন্য দল থেকেও অব্যাহতি নেন তিনি। তবে অব্যাহতিপত্র গ্রহণ না করে দল থেকে তাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। ২০-দলীয় জোটের শরিক জামায়াতের সিলেট মহানগর আমিরও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন।
এদিকে সিলেট ছাত্রদলেও দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। সদ্য গঠিত কমিটি নিয়ে অসন্তোষে সংগঠনটির বড় অংশই নেই বিএনপি প্রার্থীর সঙ্গে। সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের সংঘর্ষ এড়াতে বিদ্রোহী গ্রুপের ৯ নেতাকে কেন্দ্রে জরুরি তলব করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
শুক্রবার বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী বদরুজ্জামান সেলিম অভিযোগ করেন, তার পক্ষে প্রচারে অংশ নেওয়া কর্মীদের
বিএনপি প্রার্থীর লোকজন হুমকি দিচ্ছেন। ভয়ে তারা বাইরে বেরোতে পারছেন না। প্রচারের ছবি দেখে চিহ্নিত করে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী এ জন্য মাঠেই নামতে পারছে না বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও এখনো দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে তাকে সমঝোতার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে দাবি করে সেলিম বলেন, নগরীতে দেখবেন আমার পোস্টারও ঠিকমতো লাগানো হয়নি। নানামুখী চাপে বিপর্যস্ত আমি। তবে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমি শেষ পর্যন্ত লড়ে যাব।
বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী শুরু থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে এলেও শনিবার সকালে গণসংযোগকালে তিনি নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে থাকলে হয়তো সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করা যায়। তবে মানুষের মধ্যে এখনো ভয় আছে, নিজের ভোট দিতে পারবে কিনা। এটা দূর করতে হবে।
নির্বাচনী আচরণবিধি বিষয়ে পারস্পরিক অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এসব সামান্য দোষত্রুটি সবারই আছে।
শনিবার নগর ঘুরে দেখা যায়, প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রচারে মুখর সিলেট নগরী। পোস্টারে ছেয়ে গেছে অলিগলি পর্যন্ত। রাত পর্যন্ত মাইকে বাজছে প্রার্থীদের নিয়ে বানানো গান। এ নিয়ে বিরক্তও অনেকে। বিকালে সরেজমিন দরগা এলাকায় গেলে সেখানকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, এই সময়টায় স্কুল থেকে এসে বাচ্চারা একটু ঘুমিয়ে নেয়। কদিন ধরে মাইকিংয়ের যন্ত্রণায় তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
সাময়িক অসুবিধা হলেও বেশিরভাগ নাগরিক বলছেন, এই সময়টা গুরুত্বপূর্ণ, পাঁচ বছরে এই সময়টায়ই শুধু সাধারণ জনতার মূল্যায়ন করা হয়। নেতারা ছুটে আসেন আমাদের ঘরে।
শনিবারও নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ করেছেন প্রার্থীরা। বেলা ১১টায় নগরীর কালীঘাট, কামালগড় এবং ছড়ার পাড় এলাকায় গণসংযোগ করেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। অন্যদিকে পায়রা, দরগাহ মহল্লা এলাকায় গণসংযোগ করেন আরিফুল হক চৌধুরী। এ ছাড়া আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে গণসংযোগ করেন নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদির লুনা।
সূত্র : আমাদের সময়