হিলিতে নিপা ভাইরাস: নেই কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
অনলাইন ডেস্ক : ভারতের কলকাতা সহ কেরালা ও হায়দ্রাবাদে নিপা ভাইরাসের সংক্রামণ ছড়িয়ে পড়লেও এখনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি স্থলবন্দর ও চেকপোস্টে। ফলে এই বন্দর দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিদিনই বাংলাদেশ ও ভারতে প্রবেশ করছে শত শত পাসপোর্ট যাত্রী। পাশাপাশি আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাকও ঢুকছে অনায়াসে। আর একারণে হিলি স্থলবন্দর এলাকায় এবং দেশে নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, নিপা ভাইরাস সংক্রমণে ভারতের কেরালা রাজ্য, হায়দ্রাবাদে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়ে সেখানকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও অনেকে। গত রবিবার কলকাতায় মৃত্যু হয় সেনু প্রসাদ নামে এক সেনা সদস্যের। তবে তার মৃত্যু নিপা ভাইরাসে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও নিপা ভাইরাসকে একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না সেখানকার চিকিৎসকরা। কারণ সম্প্রতি তিনি কেরালা থেকে বদলী হয়ে কলকাতায় আসেন।
এদিকে বাংলাদেশে পাসপোর্টে আসা ভারতের রায়গঞ্জের অনিল চন্দ্র মোহন্ত জানান, আমাদের দেশে নিপা ভাইরাস নিয়ে প্রতিদিন খবরের শিরোনাম হচ্ছে। আমি হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসার পথে চেকপোস্টের কোনো অংশেই আমার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি। তবে বাংলাদেশে এই ভাইরাস দেখা দিলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কোনো লোককে স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করিয়ে ঢুকতে দিত না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও : জোড়া ব্রেনের রাবেয়া-রোকেয়া: দ্বিতীয় অপারেশনে ৩০-৫০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি লাগবে
ভারত থেকে দেশে ফিরে আসা পাসপোর্ট যাত্রী আতাউর রহমান ও উমর ফারুক জানান, কলকাতায় নিপা ভাইরাসের কথা শুনেছি। অনেককে মুখে মাস্ক পড়ে ঘুরতে দেখেছি। হিলি চেকপোস্ট দিয়ে দেশে প্রবেশের সময় আমাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি। এই চেকপোস্ট দিয়ে অধিকাংশ যাত্রী ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যান। তাই দ্রুত হিলি চেকপোস্টে মেডিকেল টিম বসানো না হলে যাত্রীরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন। আর একারণে হিলি স্থলবন্দর এবং দেশে নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আমদানিকৃত পণ্যবাহী ভারতীয় কয়েকজন ট্রাক চালক বলেন, হিলি স্থলবন্দরে প্রতিদিন একশোর উপরে ভারতীয় ট্রাক আমদানিকৃত বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসে। এর মাধ্যমে দুইশ’ চালক ও হেলপার প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। আমরাও চাই নিপা ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হোক।
দিনাজপুরের হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের অফিসার ইনচার্জ আফতাব হোসেন জানান, ভারতে নিপা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি পত্র-পত্রিকায় এসেছে। এব্যাপারে ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বা বন্দরে পাসপোর্ট যাত্রী ও ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের চালক-হেলপারদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিম বসানো হয়নি। প্রতিদিন এই চেকপোস্টের মাধ্যমে প্রায় তিনশ’ যাত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাতায়াত করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াসিফ হোসেন শাহ জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে হিলি চেকপোস্টে মেডিকেল টিম বসানোর বিষয়ে কোনো দিক নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা পেলে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।