সোমবার, ৪ঠা জুন, ২০১৮ ইং ২১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে

বিয়ে অতি পরিচিত একটি সামাজিক বন্ধন। এ বন্ধনের জন্য কতিপয় বিধি-বিধান মহান রাব্বুল আলামিন প্রবর্তন করেছেন। বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দেয়া স্বত্ত্বেও কোন ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছেন, যেমনিভাবে সকল নারীকেই ঢালাওভাবে জায়েয করেননি। সামাজিক রীতিনীতি ও নির্লজ্জ আচরণের জন্য কতিপয় নারীর সঙ্গে বিয়ে বন্ধন হারাম করেছেন।

মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘যে নারীকে তোমাদের পিতা-পিতামহ বিবাহ করেছে তোমরা তাদের বিবাহ করো না। কিন্তু যা বিগত হয়ে গেছে। এটা অশ্লীল, গযবের কাজ এবং নিকৃষ্ট আচরণ। তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতা, তোমাদের কন্যা, তোমাদের বোন, তোমাদের ফুফু, তোমাদের খালা, ভ্রাতৃকণ্যা; ভগিনীকণ্যা তোমাদের সে মাতা, যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে, তোমাদের দুধ-বোন, তোমাদের স্ত্রীদের মাতা, তোমরা যাদের সাথে সহবাস করেছ সে স্ত্রীদের কন্যা যারা তোমাদের লালন-পালনে আছে। যদি তাদের সাথে সহবাস না করে থাক, তবে এ বিবাহে তোমাদের কোন গোনাহ নেই। তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রী এবং দুই বোনকে একত্রে বিবাহ করা; কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাকারী, দয়ালু। এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে। শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ ও রহস্যবিদ। (সুরা নিসা: ২২-২৪)। আলোচ্য আয়াতসমূহে যাদের সঙ্গে বিয়ে হারাম এবং হালাল এমন নারীদের বিবরণ দেয়া হয়েছে। সুতরাং যেসব নারী কোনো অবস্থায়ই হালাল হয় না, তাদের মুহাররামাতে আবাদিয়া বা ‘চিরতরে হারাম’ বলা হয়। আর কিছু নারী চিরতরে হারাম নয়, কোনো কোনো অবস্থায় তারা হালালও হয়ে যায়।

আরও : জোড়া ব্রেনের রাবেয়া-রোকেয়া: দ্বিতীয় অপারেশনে ৩০-৫০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি লাগবে

তিনপ্রকার হারাম : ১. বংশগত হারাম নারী। তারা হচ্ছে জননী, কন্যা, এভাবে ঊর্ধ্বতন ও অধঃস্তন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সবাই তাদের অন্তর্ভুক্ত। ২. দুধ সম্পর্কিত হারাম নারী। তারা হচ্ছে তোমাদের ঐ সব মাতা, যারা তোমাদেরকে স্তন্যপান করিয়েছে এবং ঐ সব বোন যারা দুধ পান করার কারণে বোন। ৩. শ্বশুর সম্পর্কের কারণে হারাম নারী। তারা হচ্ছে তোমাদের স্ত্রীদের মাতা। তাদের বিয়ে করা চিরতরে হারাম।

জাহিলিয়াত যুগে পিতার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীকে অর্থাৎ পুত্রেরা বিনাদ্বিধায় বিয়ে করে নিত। উক্ত আয়াতে আল্লাহ এ নির্লজ্জ কাজটি নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন এবং একে আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ বলে অভিহিত করেছেন। বলা বাহুল্য, যাকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত মা বলা হয়, পিতার মৃত্যুর পর তাকে স্ত্রী করে রাখা মানব চরিত্রের জঘন্যতম অপমৃত্যু ছাড়া আর কি হতে পারে!
লেখক: শিক্ষাসচিব, বাইতুন নূর মাদ্রাসা ঢাকা।

Print Friendly, PDF & Email

এ জাতীয় আরও খবর

জোড়া ব্রেনের রাবেয়া-রোকেয়া: দ্বিতীয় অপারেশনে ৩০-৫০ লাখ টাকার যন্ত্রপাতি লাগবে

বমি হলে কি রোজা ভেঙে যায়?

সুরা আল-ফজর: আল্লাহর কুদরতের পথ প্রদর্শক

বিআরটিসির ঈদ স্পেশাল সার্ভিসের টিকিট বিক্রি শুরু ৫ জুন

নবীজি যেভাবে রোজা রাখতেন

তাকওয়া অর্জনের শ্রেষ্ঠ সময় যায় বহিয়া