যে পাঁচজন উপদেষ্টাকে নিয়োগ দিলেন মাহথির
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহথির মোহাম্মদ খুব শীঘ্রই ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। এজন্যে তিনি ৫ জন উপদেষ্টা নিয়োগ দিয়েছেন। এদের প্রায় সবাই মাহথিরের সঙ্গে দুই দশক ধরে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এরাই মালয়েশিয়ার আগামী দিনের অর্থনৈতিক কর্মসূচি নির্ধারণ, বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে শলাপরামর্শ করে সার্বিক নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। মাহথির যতক্ষণ না নতুন অর্থমন্ত্রীর নিয়োগ দিচ্ছেন তার অভাব পূরণ করবেন এরা। এরাই মাহথিরের উপদেষ্টা দল।
এদের মধ্যে রয়েছেন, দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, কোটিপতি ব্যবসায়ী, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও সরকারি তেল কোম্পানির সাবেক নির্বাহী। তারা ইতিমধ্যে সেলস ট্যাক্স আরোপ, জালানি ভতুর্কি চালু, বড় ধরনের সরকারি প্রকল্প পর্যালোচনা ও বেতন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছেন। এদের একজন হচ্ছেন দাইম জাইনউদ্দিন (৮০) যিনি ব্রিটেন থেকে আইন বিষয়ে লেখাপড়ার পর রিয়েল এস্টেট ও ব্যাংকিং ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন দেশটির অর্থমন্ত্রী। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সালে এশিয়ায় যে অর্থনৈতিক বিপর্যয় শুরু হয় তা থেকে তিনি তার দেশকে রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। ব্যাংকগুলোর সুদের হার হ্রাস, রাস্তাঘাট ও শিক্ষায় বিনিয়োগ করে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক বিপর্যয় মোকাবেলা করেন তিনি।
দ্বিতীয় জন হচ্ছে জেইতি আখতার আজিজ (৭০)। একমাত্র ও মালয়েশিয়ার প্রথম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে ১৬ বছর দায়িত্ব পালন করেন। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতির ওপর ডক্টরেট করেন তিনি। বিনিয়োগকারীদের শক্তিশালী উদ্যোগে তার ভূমিকা অপরিসীম। ১৯৯৮ সালে তিনিই ঘোষণা দেন পুঁজি নিয়ন্ত্রণের।
তৃতীয় জন হচ্ছেন হাসান ম্যারিকান (৬৫)। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার জাতীয় জালানি প্রতিষ্ঠান পেট্রোলিয়াম ন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী ছিলেন। যার হাতে গড়ে ওঠে পেট্রোনাস যা বিদেশে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। জালানি খাতে তার রয়েছে তিন দশকের কাজের অভিজ্ঞতা। আর এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। টেমাসেক ইন্টারন্যাশনাল এ্যাডভাইসরসের সিনিয়র উপদেষ্টা তিনি।
চতুর্থ জন হচ্ছেন, জোমো কাওয়াম সুন্দরাম (৬৫)। এই প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ একসময় জাতিসংঘের মহাসচিবের উন্নয়ন সহকারি হিসেবে কাজ করেছেন। ইয়েল ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করার পর মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক অর্থনীতির ওপর তার বিখ্যাত বই ‘এম ওয়ে: মাহথির’স ইকোনোমি পলিসি লিগ্যাসি’ লেখেন। মালয়েশিয়ায় চীনের বিনিয়োগের ব্যাপারে আগেভাগেই সতর্ক করে তিনি বলেছিলেন, পরাশক্তি একটি দেশকে কখনো উন্নয়নের জন্যে ‘ব্লাঙ্ক চেক’ দেওয়া যায় না।
পঞ্চম জন হচ্ছেন, রবার্ট কুক (৯৪)। বাণিজ্য সম্প্রসারণে যিনি অকাতরে বিনিয়োগ করার জন্যে ‘সুগার কিং’ হিসেবে পরিচিত। হংকং ও সিঙ্গাপুরেও ব্যাপক বিনিয়োগ করেছেন কুক। বেইজিংএ সর্বোচ্চ উঁচু ভবনের মালিক ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় পামওয়েল ব্যবসায়ী তিনি। চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখেন কুক। চীনের সঙ্গে মালয়েশিয়ার ৩৪ বিলিয়ন ডলারের গ্যাস পাইপ লাইন ও ১৭ বিলিয়ন ডলারের ইস্ট কোস্ট রেইল লিংক প্রকল্পের অন্যতম রুপকার তিনি।