বর্তমান সরকার শ্রমজীবী মানুষের বন্ধুপ্রতীম নয়: নজরুল ইসলাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন,শ্রমিক আন্দোলনকে নিস্তব্ধ করতে মে দিবসকে বেছে নিয়েছে সরকার,এই সরকার শ্রমজীবী মানুষের বন্ধুপ্রতীম নয়।
তিনি বলেন, এই সরকার নির্বাচিত নয়, এই সরকার জনগণের বন্ধুপ্রতীম না, তারা শ্রমজীবী মানুষের বন্ধুপ্রতীম না। তার পরেও এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন আমরাই করতে চাই জনগণকে সাথে নিয়ে। বিদেশীরা কেউ এ ব্যাপারে খবরদারি করুক আমরা চাই না। কিন্তু সরকার এমন সব আচরণ করছে যেসব আচরণে আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি লঙ্ঘিত হচ্ছে যার ফলে অনিবার্যভাবে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদের সম্মুখীন হতে হবে সরকারকে।
মঙ্গলবার (১ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলকে সমাবেশের অনুমতি না দেয়া প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করে বলেন, আজকে বাংলাদেশে শ্রমিক আন্দোলনকে নিস্তব্ধ করার জন্য মে দিবসকে বেচে নেয়া হলো। বাংলাদেশের আজকে সবাই মে দিবস উদযাপন করছে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রধানমন্ত্রী দেশের বাহিরে ছিলেন সেটার জন্য রাষ্ট্রপতি সেখানে বক্তব্য রাখবেন। শ্রমমন্ত্রীর নেতৃত্বে মিছিল হয়েছে। সব শ্রমিক সংগঠন মিছিল করছে মিটিং করছে, করতে পারবে না শুধু জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। কি অপরাধ? অপরাধ হলো শ্রমিক দল শহীদ জিয়ার আদর্শে উদ্দীপ্ত বেগম জিয়ার খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ এবং এই সংগঠনটি শ্রমজীবী মানুষের আদর্শে আদর্শিত।
এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা তো আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য এটার সদস্য হিসাবে নিশ্চয়ই আমরা কখন কোনো প্রোগ্রাম করি এটা তাদেরকে জানাতে হয়। এইবার যে আমরা পারলাম না কেন এটাও জানাতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি এ ব্যাপারে তারা নিশ্চয়ই তাদের অবস্থান ব্যক্ত করবে যা আমাদের দেশের জন্য মর্যাদার ব্যাপার হবে না।
শ্রমিক দল সব ধরনের নিয়মনীতি অনুসরন করে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল তারপরও কেন অনুমতি দেয়া হলো না এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, বাংলাদেশে তো এখনও আইনিভাবে বাকশাল কায়েম করা হয় নাই, এখনও তো এদেশে ৭৫’র জানুয়ারির মতো একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়নি অন্যসংগঠনগুলো তো ঠিকই পালন করছে কিন্তু প্রধান বিরোধী সংগঠনকে বাধা দেয়া হবে কেন? সরকার যদি এটাই করতে চায় বিএনপি বা তার কোনো সংগঠনকে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেয়া হবে না এটা আইন করে দিলেই তো ভাল হয়। সরকারি নির্দেশনা জারি করা হোক। সারা দুনিয়ার মানুষ জানুক এই সরকার কি চায়। কিন্তু তারা (সরকার)লিখিত ভাবে কিছু করছে না কাজে কর্মে করছে।
দিনে দিনে সরকার আরও বেশি স্বৈরাচারী হয়ে উঠছে মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘সরকার বিমাতাসূলভ আচরণ করছে বিরোধী সংগঠনগুলোর প্রতি। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল মে দিবসের কর্মসূচি সারাদেশেই করছে কিছু যায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে। গত বছর আমরা এই নয়াপল্টন থেকে মিছিল করেছি তার আগের বছর সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করেছি কিন্তু এবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও জনসভা করতে দেয়া হলো না, র্যালিও করতে দেয়া হলো না। অর্থ্যাৎ দিনে দিনে সরকার আরও বেশি স্বৈরাচারী হয়ে উঠছে। এই তথ্য যখন বিশ্ববাসী জানবে তখন তারা জার্মানির সেই সংগঠনের যে রিপোর্ট বাংলাদেশ একটি স্বৈরাচারী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে তাহলে সেই রিপোর্টকে আরও বেশি শক্তিশালী করবে। সেই রিপোর্ট যে সঠিক ছিল সেটার পক্ষে প্রমাণ হিসাবে কাজ করবে সরকারের এবারের এই সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আজকে খালি পড়ে আছে কেউ সমাবেশ করার জন্য সেটি চায়নি, তারপরও আমাদেরকে দেয়া হলো না। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার জন্য আমাদের যে প্রস্তুতি ছিল ঐ প্রস্তুতি নিয়ে আজকে আমাদের মিছিল করার কথা ছিল ১১টার সময় এই কার্যালয়ের সামনে থেকে। সরকারের কাছে সেটির রিপোর্ট আছে একটা বিশাল র্যালি হবে, তাই সরকার সেটি চায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী,শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন,সাধারন সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান প্রমুখ।