কারাগারে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইছেন স্নিগ্ধা!
রংপুর প্রতিনিধি : রংপুরে নিহত আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবুসোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিককে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। সেখানে প্রায় ১০০ নারী বন্দির সঙ্গে একই কক্ষে রয়েছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারা কর্মকর্তা রোববার সমকালকে জানান, কারাগারে অধিকাংশ সময় উদাস মনে রবীন্দ্র সঙ্গীত গাইছেন স্নিগ্ধা। আবার কখনও দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন তিনি।
ওই কারা কর্মকর্তা জানান, মাঝে মধ্যে অন্য বন্দিদের সঙ্গে ভাব জমানোর চেষ্টাও করছেন স্নিগ্ধা। তাদের কাছ থেকে পান-সুপারি চেয়ে নিয়ে খাচ্ছেন। জেলখানায় সরবরাহ করা খাবার স্বাভাবিক ভাবেই গ্রহণ করছেন তিনি।
রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, অনেক সময় গভীর রাতে পায়চারি করছেন স্নিগ্ধা । তবে যে কক্ষে তাকে রাখা হয়েছে সেখানকার অনেক নারীই তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছেন।
অন্যদিকে স্নিগ্ধার প্রেমিক কামরুল ইসলাম পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সম্পর্কের সবকিছুই জানাচ্ছেন। কামরুলকে জিজ্ঞাসাবাদকারী এক কর্মকর্তা জানান, কামরুল তাদের বলেছেন, ‘স্নিগ্ধা ভৌমিক প্রায়ই কেঁদে কেঁদে আমাকে তার পরিবারের অশান্তির কথা বলতেন। এসব কথা শুনতে শুনতে স্নিগ্ধার প্রতি আমার মায়া জন্মে যায়। মায়া থেকেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি আমরা।’
এর আগে র্যাব জানায়, গত ২৯ মার্চ রাতে ভাত ও দুধের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বাবুসোনাকে অজ্ঞান করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম। এরপর বাবুসোনার মরদেহ আলমারিতে ভরে ৩০ মার্চ সকালে ভ্যানে করে তাজহাট মোল্লাপাড়ায় কামরুলের ভাই খাদেমুল ইসলামের নির্মাণাধীন বাড়ির মেঝেতে গর্ত করে পুঁতে রাখেন। পরে স্নিগ্ধা প্রচারণা চালান তার স্বামী সকালে বেরিয়ে আর ফেরেননি। নিখোঁজের ৫দিন পর গত ৩ এপ্রিল স্নিগ্ধা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলামকে আটকের পর তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক র্যাব বাবুসোনার গলিত মরদেহ উদ্ধার করে। এব্যাপারে বাবুসোনার ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক বাদি হয়ে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে আদালতে বাবুসোনাকে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন স্নিগ্ধা। রংপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা ইয়াসমিন মুক্তার খাস কামড়ায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা ধরে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।
অন্যদিকে কামরুলকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে রংপুরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।