রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় কালবৈশাখীর হানা, নিহত ৬
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কালবৈশাখীর হানায় বৈদ্যুতিক তারে ঝড়িয়ে এবং শিলাবৃষ্টিতে কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এছাড়া শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ফসলহানির পাশাপাশি ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় কালবৈশাখী ঝড়ের এই তাণ্ডব চলে।
রংপুর
প্রথম কালবৈশাখীর তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রংপুরে। জেলার দুই উপজেলায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে প্রাণহানির পাশপাশি ঘরবাড়ি ও ফলসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ঝড়ে বিদ্যুতের তার স্পৃষ্ট হয়ে শুক্রবার দুপুরে জেলার গঙ্গাচরা ও বদরগঞ্জ উপজেলায় দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করলেও তাৎক্ষণিক নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি।
দিনাজপুর
কালবৈশাখী ঝড়ে শিলাবৃষ্টির আঘাতে পার্বতীপুর উপজেলায় সৈয়দ আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সৈয়দ আলী পার্বতীপুর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়নের চৈতাপাড়া গ্রামের মৃত লাল মোহাম্মদের ছেলে।
দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলার প্রায় সবকটি উপজেলায় এই ঝড় ও শিলা বৃষ্টি হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে পার্বতীপুর, নবাবগঞ্জ, চিরিরবন্দর। এই কয়েকটি উপজেলার হাজার হাজার একর জমির গম, ভুট্টা, বোরো ক্ষেতসহ বিভিন্ন ফসল এবং আম ও লিচুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে শত শত ঘর-বাড়িরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মাগুরা
মাগুরায় বিকাল ৫টার দিকে হঠাৎ ঝড়ো বৃষ্টিতে বড় বড় আকারে শিলা পড়তে শুরু করে। এ সময় সদর উপজেলার ডহরসিংড়া গ্রামের আকরাম হোসেন (৩৫) ক্ষেতে কাজ করা অবস্থায় বৃহদাকার শিলা বৃষ্টির আঘাতে গুরুতর আহত হন। পরে এলাকাবাসী খবর পেয়ে তাকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
যশোর
যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ গ্রামে কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়া তারে জড়িয়ে লাইজু খাতুন (১৯) নামে এক কলেজছাত্রী মারা গেছেন। এসময় নওয়াপাড়া গ্রামের ফাতেমা বেগম (৪০) ও প্রেমবাগ গ্রামের কলেজছাত্রী ঐশী খাতুন (১৯) আহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত লাইজু খাতুন যশোর আদর্শ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আহত ঐশীও একই কলেজের ছাত্রী। আহত ফাতেমা বেগম নওয়াপাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দীনের স্ত্রী।
অভয়নগরের প্রেমবাগ ইউনিয়নের মেম্বর সৈয়দ শওকত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পাবনা
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের গৃহবধূ জামিলা বেগম (৫০) বাড়ির পাশের লিচুবাগানে ডালপালা কুড়াতে গিয়ে শিলার আঘাতে মারা যান। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসরাইল হোসেন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও নাটোরসহ রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের প্রায় সবক’টি জেলায় আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। এতে বেশ কয়েকজন আহতসহ ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।