যশোর রোডের শতবর্ষী গাছগুলো কাটা বন্ধে আইনি নোটিস
ঐতিহাসিক ‘যশোর রোড’র চার হাজারেরও বেশি শতবর্ষী গাছ কাটা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে।
বেসরকারি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শেখ মো. মহিবুল্লাহর পক্ষে নোটিসটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, যশোরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে গাছ কাটা বন্ধে সাত দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে তারা পদক্ষেপ না নিলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে সাংবাদিকদের জানান আইনজীবী ইশরাত।
সড়ক সম্প্রসারণের জন্য এই গাছগুলোর কাটার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছে সড়ক বিভাগ; তবে তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে বিভিন্ন সংগঠন।
এক সময়ের পূর্ব বঙ্গ থেকে কলকাতা যাওয়ার প্রধান সড়ক পথ যশোর রোডে দুই পাশে দুইশ’র বেশি গাছ রয়েছে দেড়শরও বেশি বছর বয়সী।
এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও জড়িত। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন জানাতে এলে এই সড়কটি নিয়ে কবিতা লিখেছিলেন আমেরিকান কবি অ্যালেন গিনসবার্গ।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে যশোর রোড বলতে দমদম থেকে বনগাঁর পেট্রোপোল সীমান্ত পর্যন্ত মহাসড়ককে বোঝায়। ওই সড়কের পাশে গাছ কাটায় কলকাতা হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞার কথাও উল্লেখ করা হয় আইনি নোটিসে।
এতে বলা হয়, “যশোর রোড এবং এর গাছ জাতীয় ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্যের দাবি রাখে। কিন্তু রাস্তা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা থেকে যদি সরে না আসে, তাহলে একটি ঐতিহ্যের মৃত্যু ঘটবে। এই রাস্তাটি এবং রাস্তার গাছগুলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত ইতিহাস।
“সরকার দাবি করছে যে, গাছগুলো প্রতিস্থাপন করবে। কিন্তু ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতিস্থাপন হয় না। তাই ইতিহাস-ঐতিহ্যকে আমাদের রক্ষা করতে হবে।”
রাস্তা সম্প্রসারণে প্রশাসনের গাছ কাটার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি দাবি করে নোটিসে বলা হয়েছে, “যশোরের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলছিলেন যেভাবে প্রকল্পটি পাস হয়েছে ঠিক সেভাবে বাস্তবায়ন করতে গেলে গাছ কাটা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
“তিনি বলছিলেন রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য টেন্ডার অনুমোদনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ মাস অর্থাৎ জানুয়ারিতে হয়ে গেলে ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। গত ৬ জানুয়ারি যশোর জেলা প্রশাসকের সভা কক্ষে এক মত বিনিময় সভায় সিদ্ধান্ত হয় এই গাছ কাটার বিষয়ে।”
তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ বন্ধে আইনি নোটিস পাঠানো হয়।