শেষ মুহূর্তের তিন মেয়র প্রার্থীর প্রচার
রংপুর প্রতিনিধি : সকাল ৯টা। কুয়াশার সঙ্গে কনকনে শীত। নগরীর বেশিরভাগ মানুষ ঘুম থেকে ওঠেননি। এরই মধ্যে রংপুর নগরীর কলেজ রোড় শান্তিবাগ এলাকার বাড়ি থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচারণায় বেরিয়ে পড়েন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। ওই সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রংপুর জাতীয় পার্টির দুর্গ। যে কোনো নির্বাচনে এখানে জাপার প্রার্থীই জয়লাভ করেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। নির্বাচন কমিশনের খারাপ মতলব থাকলে তার পরিণাম ভালো হবে না।’ মোস্তফা আরও জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে তাদের ১০ সদস্যের একটি টিম থাকবে। রংপুরের জনগণ তার পক্ষে রয়েছেন। ২১ ডিসেম্বর তারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোট লাঙ্গল মার্কায় দিয়ে তাকে জয়ী করবেন।
এর পরই তিনি চলে যান বড়বাড়ি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারে। সেখানে তিনি ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। ভোটারদের তিনি বলেন, আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে আমি রংপুর সিটিকে একটি মডেল সিটি করে তুলব। যেখানে কোনো ধরনের দুর্নীতি-অনিয়ম থাকবে না। এরপর তিনি রংপুর নগরীর আশপাশে প্রচারণা চালান। জাপা মেয়র
প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, তার এই প্রচারণার কাজ চলবে রাত ১২টা পর্যন্ত।
আরও : বাংলাদেশের উপকূলে আসতে থাকা জ্বলন্ত জাহাজ আটকে দিলো ভারত
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ ঝন্টু সকাল ১১টায় নগরীর গুপ্তপাড়ার বাড়ি থেকে প্রচারণায় বের হন। ওই সময় তার বাড়ির সামনে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমার পাঁচ বছরে সিটি করপোরেশন এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে, তা রংপুরের ইতিহাসে হয়নি। বর্তমানে দেড়শ’ কোটি টাকার কাজ চলমান। শ্যামা সুন্দরী খালের ওপর একটি ফ্লাইওভার করার প্রকল্প রয়েছে। এটা হলে রংপুর শহরের যানজট কমে যাবে। আমি আমার আমলের অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছি।’
তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘আমার আমলে সিটি করপোরেশনে কোনো দুর্নীতি হয়নি। এ জন্য দুর্নীতিবাজরা আমার ওপর ক্ষুব্ধ। কিন্তু রংপুরবাসী আমার সঙ্গে রয়েছেন। তারা ২১ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন।’ এর পর নৌকার প্রার্থী ঝন্টু কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নগরীর বেতপট্টিস্থ দলীয় কার্যালয়ে যান। সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর চলে যান প্রচারণার কাজে। তিনি সিটি বাজার এলাকায় ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেন। ওই সময় তিনি ভোটারদের বলেন, উন্নয়ন মানেই নৌকা আর নৌকা মানেই উন্নয়ন। তাই সকলে মিলে রংপুরকে আধুনিক সিটি করতে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। এরপর তিনি লালবাগ এলাকায় প্রচারণা চালান।
এদিকে বিএনপি প্রার্থী কাওছার জামান বাবলা মাহিগঞ্জ ফতেপুর এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে বের হন সকাল সাড়ে ১০টায়। সেখানে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মানুষ বর্তমান সরকারের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এর জবাব তারা দেবেন ২১ ডিসেম্বর ভোটের মাধ্যমে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাবলা বলেন, আমরা এখনও সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে রয়েছি। কারণ এ সরকার ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে। তারা সিটি নির্বাচনে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে নানা ধরনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে। সিটিবাসী সে পাঁয়তারা প্রতিহত করবে। তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে প্রথম কাজ হবে সিটি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। মাদকমুক্ত সিটি করপোরেশন এবং বেকার সমস্যার সামধান করা হবে। এরপর তিনি কর্মী-সমর্থদের নিয়ে কুকরুল জলচ্ছত্র এলাকায় প্রচারণা চালাতে যান। সেখানে ভোটারদের কাছে তিনি ধানের শীষের পক্ষে ভোট চান। তিনি বলেন, উন্নয়নের মার্কা হচ্ছে ধানের শীষ। ধানের শীষে ভোট দিলে মানুষ শান্তিতে থাকে। সেখান থেকে তিনি হনুমানতলাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালান।