সোমবার, ১৮ই জুন, ২০১৮ ইং ৪ঠা আষাঢ়, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা

উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য আরও প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা নাফ নদের ওপারে রাখাইন রাজ্যের ধনখালী এলাকায় জড়ো হয়েছে। মঙ্গলবার ভোররাতে পাঁচ শতাধিক রোহিঙ্গা নাফ নদ পার হয়ে কুতুপালংয়ে পৌঁছালে তাদের মধুরছড়া ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়েছে। নতুন করে আসা এই রোহিঙ্গারা জানান, মিয়ানমার সরকার ওই দেশে তাদের কাউকে থাকতে দেবে না।

মঙ্গলবার মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে আশ্রয় নেওয়াদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিয়ানমারের বুচিডং থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে আসতে তাদের প্রায় এক মাস সময় লেগেছে। এ সময় তাদের খাবার-দাবার কিছু ছিল না। রাখাইনের আশপাশে বসবাসরত কিছু রোহিঙ্গা পরিবার তাদের কিছু খাবার দিলেও অধিকাংশ অনাহারে-অর্ধহারে ছিল। নাফ নদের ওপারে রাখাইন রাজ্যের ধনখালী এলাকায় বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছেন বলে জানান সেখান থেকে পালিয়ে আসা কয়েকজন।

মধুরছড়া ক্যাম্পে আশ্রিত বুচিডং মোস্তাফিজপাড়া গ্রামের ছৈয়দ উল্লাহ (৪৫) জানান, মাস খানেক আগে সামরিক জান্তা ও উগ্রপন্থি রাখাইন জনগোষ্ঠী তাদের গ্রামে প্রবেশ করে বসতভিটা ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ছেড়ে না দিলে হত্যা এবং বসতভিটা জোর করে দখল করার হুমকিও দেয়। ফলে জীবন বাঁচাতে তারা তাদের আদি বসতভিটা ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।

আরও : বাংলাদেশের উপকূলে আসতে থাকা জ্বলন্ত জাহাজ আটকে দিলো ভারত

আরেকজন বুচিডং ছামিলাপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী (৪৭) জানান, মোস্তাফিজপাড়া, ছামিলাপাড়া ও কুয়াইচং পাড়ায় বসবাসরত পরিবারগুলোর সদস্যদের গ্রামের বাইরে যেতে দিচ্ছে না সশস্ত্র সেনাবাহিনী। তারা ওইসব গ্রামে টহল দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সেনা সদস্যরা মাঝে মাঝে ফাঁকা গুলি করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

কুয়াইচং পাড়া গ্রামের স্বামী হারা মাহামুদা (৫০) জানান, তিনি চার মেয়ে ও তিন ছেলে নিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছেন। মাঠে তাদের পাকা ধান ঝরে পড়ছে। মেয়েদের কারণে পোষা পশু ও হাঁস-মুরগি, পুকুরের মাছ, ঘরবাড়ি ফেলে চলে আসতে তিনি বাধ্য হয়েছেন। উগ্রপন্থি রাখাইন যুবকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের হুমকি দিচ্ছিল। যে কোনো সময় ওই উগ্রপন্থিরা মেয়েদের ধর্ষণ করতে পারে- এ ভয়ে তিনি পালিয়ে এসেছেন।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমের প্রোগ্রাম অফিসার সৈকত বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিন ৫০-৬০ জন করে নতুন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আসছে।

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এসএম আরিফুল ইসলাম বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিদিন রোহিঙ্গারা নাফ নদ পার হয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। এসব রোহিঙ্গাকে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

এ জাতীয় আরও খবর

বাংলাদেশের উপকূলে আসতে থাকা জ্বলন্ত জাহাজ আটকে দিলো ভারত

‘বাড়ি গেলে সৎ বাবা মারে’

ফেবারিটদের কী হলো?

হিজরা দলের অভিনব কায়দায় ছিনতাই

ঈদের আনন্দ এখন একটু কম, সবাইকে শুধু দিতেই হয়: চম্পা

ক্রিকেটারদের ঈদ কেমন কাটছে?