উত্তরের প্রার্থী জরিপ শেষে : কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের জন্য দলের পক্ষ থেকে জরিপ চলছে। জরিপ শেষে দলের মূল্যায়ন ও জরিপের ফল অনুযায়ী প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর সেনপাড়া পর্বতা এলাকায় আন্তমাঙ্গলিক বড়দিন উদ্যাপন কমিটি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেছেন। এর আগে ওবায়দুল কাদের বড়দিনের কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অনেক। এই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী আছে, সমর্থক প্রার্থীও আছে। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক আওয়ামী লীগের সমর্থক প্রার্থী ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগকে সমর্থন করতেন, বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। এ জন্য আওয়ামী লীগ নেত্রী তাঁকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রীর মুখ তিনি রক্ষা করেছিলেন। আওয়ামী লীগ নেত্রী একজন যোগ্য লোককে মনোনয়ন দিয়েছেন। মেয়র আনিসুল তাঁর যোগ্যতার প্রমাণ দুই বছরে দিয়ে গেছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, যোগ্য প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হবে। দলের জরিপ চলছে, তিন চারটি জরিপ চলছে। জরিপ শেষ হলে দলের মনোনয়ন বোর্ড বসবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি নিয়ম আছে। আমরা মুখস্থ একজনকে থ্রো করব না। খোঁজখবর নিচ্ছি, বাছবিচার করে জরিপ প্রতিবেদনসহ সবকিছু মিলিয়ে ঢাকা সিটির ভোটারদের কাছে সবচেয়ে বেশি যিনি গ্রহণযোগ্য, ঠিক তাঁকেই আমরা মনোনয়ন দেব। আমরা এমন ব্যক্তিকে দেব, যিনি আনিসুল হকের মতো ড্যাজলিং, যিনি আধুনিক ঢাকা সিটি গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন। সেই কাজগুলো যাকে দিয়ে করানো যাবে, সমাপ্ত করা যাবে, ঠিক এমন মানুষকে আমরা মনোনয়ন দেব।’
রংপুরে পরীক্ষিত মানুষকে আ.লীগ মনোনয়ন দিয়েছে
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, রংপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে, তিনি পোড় খাওয়া পরীক্ষিত মানুষ। গত সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগেরই লোক। পরবর্তী সময়ে তাঁকে আওয়ামী লীগ নেত্রী প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছেন। তিনি একজন প্রবীণ মানুষ। তাই তাঁকে আবার প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রার্থী করার মধ্যে কোনো গোপনীয়তা নেই। আওয়ামী লীগ এত দেউলিয়া হয়ে যায়নি যে অন্য কাউকে গোপনে সমর্থন দিতে হবে। এ ধরনের ধারণা যারা করে, তারা প্রশ্ন করার জন্যই করে। আওয়ামী লীগ যা করে প্রকাশ্যে করে।’
রংপুরে কোনো প্রভাব খাটানোর ঘটনা ঘটবে না
জাতীয় নির্বাচন সামনে থাকায় এই নির্বাচনগুলো সেমিফাইনাল উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, রংপুর সিটির পর গাজীপুর। এরপর সিলেট, বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে। এগুলো সবই সেমিফাইনাল। সেমিফাইনালের সূচনা হলো রংপুর দিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই নির্বাচনটা সুষ্ঠু হোক। আমরা চাই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ, স্বাধীন ভূমিকা পালন করুক। সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে যত প্রকার সহযোগিতা করা দরকার, তা আমরা করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনী এলাকায় কোনো প্রকার অঘটন ঘটেনি। আমার বিশ্বাস, সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনে জনগণ যাকে খুশি, তাকে ভোট দেবে। সেখানে কোনো প্রকার প্রভাব খাটানোর ঘটনা ঘটবে না।’
এ সময় চট্টগ্রামের সদ্যপ্রয়াত সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর কুলখানিতে হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, চট্টগ্রামে পদদলিত হয়ে দেশের সম্মানিত কয়েকজন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন তিনি।
আগামী নির্বাচন উপলক্ষে অনেকে ষড়যন্ত্র করতে পারে, এমন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন আসছে। অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে বাধা দিতে অনেকে মন্দির, গির্জায় হামলা করতে পারে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কেউ যেন কোনো প্রকার সমস্যার সৃষ্টি করতে না পারে। তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় মাঝেমধ্যে কিছু সমস্যা হয়। যারা আওয়ামী লীগের নামে এসব কাজ করে, তারা আওয়ামী লীগের কেউ নয়। তারা দুর্বৃত্ত। এসব দুর্বৃত্ত চক্রকে রুখতে হবে। ঐক্য নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, ঐক্যই শক্তি।’