জেরুজালেম প্রশ্নে ইউরোপীয় দেশগুলোর অবস্থানে ক্ষুব্ধ ইসরায়েল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইউরোপ সফর করার আগে ইউরোপীয় দেশগুলোর দ্বৈত ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করেছেন। ওই ঘোষণার ব্যাপারে ইউরোপ একপেশে অবস্থান নিয়েছে। নেতানিয়াহু বলেছেন ইউরোপ অবশ্যই সম্মান পাবার যোগ্য কিন্তু তাদের দ্বৈত ভূমিকা গ্রহণযোগ্য নয়।
নেতানিয়াহু এই মুহূর্তে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে রয়েছেন।
ইতোমধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অন্তত ১৫টি খসড়া প্রস্তাবেও ইউরোপীয় দেশগুলো সমর্থন দিয়েছে। ওই প্রস্তাবগুলোতে জেরুজালেমকে ‘অধিকৃত’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ কারণেও নেতানিয়াহু ইউরোপের প্রতি ক্ষুব্ধ।
আরও : বাংলাদেশের উপকূলে আসতে থাকা জ্বলন্ত জাহাজ আটকে দিলো ভারত
অবশ্য ইসরায়েলের সঙ্গে আরও বহু বিষয়েও ইউরোপের দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে। জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা কিংবা এই শহরে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর করাই আসল কারণ নয়। বিগত দুই দশক ধরেই ধীরে ধীরে ইসরায়েলের ব্যাপারে ইউরোপের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে।
ইউরোপীয় সরকারগুলো এখনও দাবি করছে তারাই ইসরায়েলকে টিকিয়ে রেখেছে।
তবে বুদ্ধিজীবী মহলে এবং ইউরোপের যুবকদের মাঝে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমালোচনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এর কারণ অনেক। বর্তমান ইসরায়েলি সরকারের পাশবিক আচরণও ইউরোপীয় তরুণদের দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রভাব ফেলেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে অন্তত ১৫ লাখ গাজাবাসী কার্যত বিশ্বের সবচেয়ে বড় কারাগারে বসবাস করছে। আন্তর্জাতিক রীতিনীতির তোয়াক্কা না করে ইসরায়েলিরা ফিলিস্তিনীদের ভূখণ্ড জবরদখল করে সেখানে ইহুদি উপশহর নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গণমাধ্যমসহ সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ইউরোপের তরুণরা এখন ফিলিস্তিনীদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারছে। এখন আর আগের মতো সত্য লুকিয়ে রাখার সুযোগ নেই। ইউরোপের বুদ্ধিজীবী শ্রেণী, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র এবং তরুণরা যুক্তি খুঁজে পায় না-কেন ইসরাইলি সেনারা ফিলিস্তিনীদের ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে অথচ পাথর ছোঁড়ার কারণে ফিলিস্তিনী যুবকদেরকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব কারণেই ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে ইউরোপের তরুণদের মাঝে প্রতিবাদ বিক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মার্কিন ঘোষণায় ইউরোপে তাই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।