আখাউড়া মুক্ত দিবস কাল
---
বিশেষ প্রতিনিধি : ১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বর এই দিনে পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার ও মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম রণাঙ্গন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী আখাউড়া উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়।
মুক্তিযোদ্বের এ রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছিলেন শহীদ সিপাহী বীর শ্রৈষ্ঠ মোস্তফা কামালসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধে পাক বাহিনী ও রাজাকারদের হাতে প্রাণ হারান নারী শিশুসহ শত শত মুক্তি পাগল জনতা।
আখাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার (সাংগঠনিক) বাহার মালদার জানান, ৭১ এর অগ্নিঝরা দিনগুলোতে ধাপে ধাপে আখাউড়ার বিভিন্ন এলাকা হানাদার মুক্ত হয়। সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকসেনাদের সন্মুখ যুদ্ধ হয়।
একাত্তরের ৩০ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর আখাউডড়ার উত্তর সীমান্তবর্তী আজমপুর ও রাজাপুর এলাকায় আধুনিক অস্ত্রে সু-সজ্জিত পাক বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়।
৩ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী আজমপুর শক্ত অবস্থান নিলে সেখানেও অবিরাম যুদ্ধ হয়। ওই যুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনীর ১১ সৈন্য নিহত ও মুক্তিবাহিনীর দু’জন সিপাহী ও একজন নায়েক সুবেদার শহীদ হন।
৪ ডিসেম্বর আজমপুরে পাক বাহিনীর মর্টারশেলের আঘাতে শহীদ হন লে. ইবনে ফজল বদিউজ্জামান। ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী সম্মিলিতভাবে আখাউড়ায় আক্রমণ করে।
৫ ডিসেম্বর সারাদিন, সারারাত তুমুল যুদ্ধের পর ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে শত্রু মুক্ত হয়। পরে আখাউড়া ডাকঘরের সামনে বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উত্তোলন করেন মুক্তি যুদ্ধকালীন পূর্বাঞ্চলীয় রণাঙ্গনের প্রধান জহুর আহাম্মদ চৌধুরী।
মুক্তিযোদ্ধের অনেক স্মৃতি বিজড়িত এ আখাউড়া। শহীদের স্মৃতি রক্ষার্থে আখাউড়ার দুরুইন গ্রামে রয়েছে বীর শ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধি।
এছাড়া গঙ্গাসাগর টান মান্দাইলে রয়েছে ৩৩ জন মুক্তিযোদ্ধার গণকবর। ভারত-বাংলাদেশে সীমান্তের শূন্য রেখায় সেনার বাদী এলঅকায় রয়েছে অসংখ্য মুক্তিযেদ্ধার আরো একটি বধ্যভূমি।
দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ আখাউড়া শাখা সংগঠন।
আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আখাউড়া শাখার আহ্বায়ক আনিছুজ্জামান খান জানান, দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হবে। তার মধ্যে সকাল ১০টায় আখাউড়া উপজেলা ডাকঘরের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তেলন। সকাল সাড়ে ১০টায় একই স্থান থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করবে। শোভাযাত্রা শেষে আমরা স্মৃতি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হবে।