স্ত্রীকে না জানিয়ে মাকে টাকা পাঠালে কি গুনাহ হবে? (ভিডিও)
---
প্রশ্ন : আমরা তিন ভাই এক বোন। ছোটবেলায় আমার বাবা মারা যান। আমাদের লালন পালন করতে গিয়ে মায়ের অনেক টাকা ঋণ হয়েছে। ঋণ পরিশোধ করা মায়ের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি বিয়ে করেছি। আমরা দুজনই চাকরি করি। আমার ছোট ভাইবোন লেখাপড়া করে। মায়ের ঋণ পরিশোধ এবং ছোট ভাইবোনের লেখাপড়ার জন্য আমার টাকা এবং আমার স্ত্রীর টাকা থেকে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পাঠাই, যা আমার স্ত্রী জানেন এবং তাঁর মতামত নিয়েছি। আমি জানতে চাই, মায়ের ঋণ পরিশোধের জন্য আমার এবং আমার স্ত্রীর টাকা থেকে যদি বেশি করে টাকা পাঠাই, যা আমার স্ত্রী জানবেন না, তাহলে কি আমার গুনাহ হবে?
উত্তর : অত্যন্ত সুন্দর প্রশ্ন করেছেন। প্রথম কথা হচ্ছে, আপনার মায়ের যে ঋণ হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আপনি উল্লেখ করেছেন যে, এ ঋণ হয়েছে মূলত আপনাদের লালন-পালনের কাজে ব্যয় করার কারণেই। যেহেতু তিনি এই কাজে ব্যয় করেছেন এবং আপনাদের জন্যই সেই সম্পদ ব্যয় করেছেন তাই ওয়াজিব হচ্ছে সেই ঋণ পরিশোধ করে দেওয়া। এটি আপনাদের এখন পরিশোধ করা প্রয়োজন, অন্যথায় তিনি এ টাকা পরিশোধ করতে পারবেন না। তাই আপনি আপনার সম্পদ থেকে যেভাবে ইচ্ছা খরচ করতে পারেন। এটা আপনার স্ত্রীকে জানানোর প্রয়োজন নেই। এবং আপনি আপনার মায়ের যে ঋণ আছে সেটা পরিশোধের জন্য চেষ্টা করুন। কারণ, মা যতক্ষণ পর্যন্ত ঋণগ্রস্ত থাকবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি মানসিকভাবে ও শারীরিকভাবে স্বস্তি পাবেন না। আর সেটা আপনাদের জন্যও কল্যাণকর হবে না। তাই আপনি চেষ্টা করুন আপনার নিজের সম্পদ থেকে যথাসম্ভব মায়ের যে ঋণ আছে সেটা পরিশোধ করার জন্য। এ ক্ষেত্রে যদি স্ত্রীকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেন, জানাতে পারেন। তাতে অসুবিধা নেই।
তবে আপনার স্ত্রীকে না জানিয়ে তাঁর টাকা থেকে টাকা পাঠাতে পারবেন না। এটা জায়েজ নেই। এটা করলে আপনার স্ত্রীর হক নষ্ট করা হবে এবং তাঁর আমানতের খেয়ানত করা হবে। আপনি আপনার স্ত্রীর উপার্জিত টাকা থেকে মায়ের ঋণ পরিশোধের জন্য টাকা পাঠাতে চাইলে অবশ্যই তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করেই পাঠাতে হবে। কারণ, স্ত্রীর সম্পদের অধিকারী স্বামী নন। তাই স্ত্রীকে না জানিয়ে তাঁর টাকা পাঠালে আপনি গুনাহগার হবেন।