g কে স্বপ্নের যে দিতে পারবেন | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বুধবার, ২৫শে অক্টোবর, ২০১৭ ইং ১০ই কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কে স্বপ্নের যে দিতে পারবেন

AmaderBrahmanbaria.COM
অক্টোবর ২২, ২০১৭
news-image

---

ইসলাম ধর্ম ডেস্ক : পবিত্র কুরআনে হমান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ইয়াকুব (আ.) তাঁর পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে বললেন] এভাবে তোমার প্রতিপালক তোমাকে মনোনীত করবেন ও তোমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দেবেন। আর তিনি তোমার প্রতি ও ইয়াকুবের পরিবার-পরিজনের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন, যেভাবে এর আগে তিনি তোমার পিতৃপুরুষ ইবরাহিম ও ইসহাকের প্রতি তা পূর্ণ করেছিলেন।

নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়। (সুরা : ইউসুফ, আয়াত : ৬)
তাফসির : ইউসুফ (আ.)-এর স্বপ্নের বিষয়ে তাঁর পিতা ইয়াকুব (আ.)-এর বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছিল আগের আয়াতে। আলোচ্য আয়াতে তাঁর বক্তব্যের বাকি অংশ উল্লেখ করা হয়েছে। এ আয়াতে বলা হয়েছে, ইয়াকুব (আ.) তাঁর পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে বললেন, হে পুত্র! মহান আল্লাহ ভবিষ্যতে তোমাকে নবী হিসেবে মনোনীত করবেন এবং আমাদের বংশের প্রতি তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন। তিনি তোমাকে স্বপ্নের তাত্পর্য ও ব্যাখ্যার জ্ঞান দান করবেন। ইয়াকুব (আ.) নবী হিসেবে আল্লাহর পক্ষ থেকে যে আসমানি জ্ঞান লাভ করেছিলেন, তার ভিত্তিতেই তিনি ইউসুফ (আ.)-কে তাঁর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অবহিত করেন। ইউসুফ (আ.)-এর স্বপ্নের মধ্যেও এ ব্যাপারে ইঙ্গিত ছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যাঁদের নবী হিসেবে মনোনীত করেন, তাঁদের তিনি পর্যাপ্ত জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করেন, যাতে তাঁরা মানবজাতিকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারেন।

এ আয়াতে ইউসুফ (আ.) সম্পর্কে তিনটি ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে।

এক. আল্লাহ ইউসুফ (আ.)-কে মনোনীত করবেন। এ ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়েছে এভাবে যে আল্লাহ তাআলা সুদূর ফিলিস্তিনে নিক্ষিপ্ত গুহা থেকে উদ্ধার করে তাঁকে মিসরের রাজ্য, সম্মান ও সম্পদ দান করেছেন। দুই. ইউসুফ (আ.)-কে ভবিষ্যতে স্বপ্নের ব্যাখ্যা সম্পর্কিত জ্ঞান দান করা হবে। পরে তিনি সে জ্ঞান লাভ করেছিলেন। সুরা ইউসুফেই সে বিষয়ে একাধিক ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। এতে জানা যায়, স্বপ্নের ব্যাখ্যা একটি স্বতন্ত্র শাস্ত্র। আল্লাহর বিশেষ বান্দারা এ বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন। তিন. আল্লাহ ইউসুফ (আ.)-এর প্রতি তাঁর নেয়ামত পূর্ণ করে দেবেন। এ কথার মাধ্যমে তাঁর নবী হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। পরে তিনি নবী হয়েছিলেন। এভাবে ইউসুফ (আ.) সম্পর্কে ইয়াকুব (আ.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী সত্যে পরিণত হয়েছিল।
স্বপ্নের ব্যাখ্যা কে দিতে পারবেন?

অনেকে না বুঝে যার-তার কাছে স্বপ্নের কথা বলে বেড়ায়। এতে সে নিজেই নিজের ক্ষতির পথ প্রশস্ত করে। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘স্বপ্নের ব্যাখ্যা যেভাবে করা হয়, সেভাবেই তা বাস্তবায়িত হয়। তোমাদের কেউ যখন স্বপ্ন দেখে, তখন আলেম বা হিতাকাঙ্ক্ষী ছাড়া কারো কাছে তা বর্ণনা করবে না। ’ (মুসতাদরাক হাকেম : ৪/৩৯১)

প্রখ্যাত স্বপ্নবিদ আল্লামা ইবনে সিরিন (রহ.) তাঁর ‘তা’বিরুর রুইয়া’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন : ‘স্বপ্নের ব্যাখ্যাকারীদের জন্য কোরআনের তাফসিরের জ্ঞান, রাসুল (সা.)-এর হাদিস সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান, আরবি ও অনারবি বিভিন্ন ভাষার শব্দের বিবর্তন সম্পর্কে অবশ্যই জ্ঞান থাকতে হবে। স্বপ্নের ব্যাখ্যা জানার জন্য বুজুর্গ, সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী ও সুসাহিত্যিক হওয়া জরুরি। এ ছাড়া যিনি স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেবেন, তাঁর কাছে স্বপ্নদ্রষ্টার সার্বিক অবস্থা ভালোভাবে জানা থাকতে হবে। ব্যাখ্যাদানকারীকে সব সময় সত্য পথে চলতে হবে। এর ফলেই আল্লাহপাক বিশেষ অনুগ্রহে তাঁকে সঠিক পথ প্রদর্শন করবেন। তাঁর কথা সত্য ও নেক হতে হবে। এর ফলে আল্লাহ তাআলা তাঁকে বিশেষভাবে সাহায্য করবেন। তাঁর চিন্তা হতে হবে সৎ ও স্বচ্ছ। খাবার হতে হবে হালাল। মোটেও অনর্থক কথা বলা যাবে না। সব ধরনের পাপ থেকে নিষ্কলুষ হতে হবে, তাহলে তিনি জ্ঞানী ও নবীদের প্রকৃত উত্তরসূরি হিসেবে গণ্য হবেন। ’