g যে কারণে রোহিঙ্গাদের পক্ষে সোচ্চার এরদোগান | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শনিবার, ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ২৫শে ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

যে কারণে রোহিঙ্গাদের পক্ষে সোচ্চার এরদোগান

AmaderBrahmanbaria.COM
সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭
news-image

---

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বিগত ৮ মাসে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বরাবরই সোচ্চার ছিলেন। এরদোগান সরাসরি বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। এরদোগানে মতো এতোটা জোরালো অভিযোগ অন্য কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান করেননি। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) এরদোগান সরাসরি ফোন করেছেন মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেত্রী অং সান সুচিকে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সুচি’র কাছে উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দুর্দশা সচক্ষে দেখতে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি আমিনে এরদোগান বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে ঢাকায় এসেছেন। তার সঙ্গে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও আছেন। বৃহস্পতিবারই তাদের টেকনাফে রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার কথা।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রোহিঙ্গা ইস্যুকে তুরস্ক কেন এতটা গুরুত্ব দিচ্ছে? যুক্তরাষ্ট্রের অস্টিন পি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক ড. তাজ হাশমি মনে করেন এর পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। তুরস্ক একসময় মুসলিম বিশ্বে নামকরা একটি দেশ ছিল। ইরান ছাড়া পুরো মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা তুরস্কের সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। হাশমি বলেন, “অনেকে এরদোগানকে বলছেন নিউ সুলতান। উনি তুরস্কের সে পুরনো রোলে (ভূমিকায়) ফিরে যেতে চাচ্ছেন। তুরস্কের পুরনো শৌর্য পুনরুত্থান করতে হবে।” রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সোচ্চার হবার পেছনে এরদোগানের ব্যক্তিগত বিষয় জড়িত আছে বলে মনে করেন হাশমি। তিনি মনে করেন, ইসলামপন্থী হিসেবে পরিচিত এরদোগান মুসলিম বিশ্বের প্রধান প্রতিনিধি হতে চাইছেন। তিনি চাইছেন, মুসলিম বিশ্বে সৌদি আরব এবং পাকিস্তানের পরিবর্তে তুরস্ককে নেতৃত্বের আসনে নিয়ে আসতে। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এরদোগান সোচ্চার হলেও মিয়ানমারের উপর তিনি কতটা চাপ তৈরি করতে পারবেন? তাজ হাশমি মনে করেন, সে সম্ভাবনা খুবই কম। ভারত এবং চীন প্রত্যক্ষভাবে এবং আমেরিকা পরোক্ষভাবে মিয়ানমারের শাসক গোষ্ঠীকে সহায়তা করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে দেবেন। চীন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো দিয়েছে। তারা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার ঘোর বিরোধী।

এছাড়া মুসলমানদের ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে নীতি তাতে মনে হচ্ছে না যে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আসবে। মার্কিন গণমাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ব্যাপার নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য হচ্ছে না,” বলে জানান তাজ হাশমি। তাঁর ধারনা বাংলাদেশকে সাথে নিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি নতুন ফ্রন্ট দাঁড় করানো যায় কিনা সে চেষ্টা তুরস্ক করছে। যদি মিয়ানমারের উপর কোন চাপ তৈরি করা সম্ভব না হয়, তাহলে এরদোগানের তাতে কী লাভ হবে? তাজ হাশমি মনে করেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সোচ্চার হয়ে এরদোগান দেশের মধ্যে এবং মুসলিম বিশ্বে এক ধরনের ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। তিনি বলেন, “মুসলিম বিশ্বে তাঁর একটা ভাবমূর্তি সৃষ্টি হবে যে উনি ইসলামের একজন চ্যাম্পিয়ন, উনি মুসলিম বিশ্বের ঐক্য সাধনে প্রচেষ্টা করছেন।” তাজ হাশমির বিশ্লেষণ অনুযায়ী, তুরস্ক চাইছে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে ইরান ও বাংলাদেশকে সাথে নিয়ে একটি ফ্রন্ট করার চিন্তা-ভাবনা এরদোগানের রয়েছে। সৌদি আরবের নেতৃত্বে রিয়াদ-ভিত্তিক ৫৫টি মুসলিম দেশের যে জোট গঠন করা হয়েছে সেখান থেকে বাংলাদেশকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করছে তুরস্ক। সে প্রচেষ্টায় তুরস্ক সফল হলে সৌদি আরবের উপর চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি সে অঞ্চলে তুরস্কের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন হাশমি। সূত্র: বিবিসি বাংলা

এ জাতীয় আরও খবর