নাফ নদীতে আজও মিলল ৬ রোহিঙ্গা নারী-শিশুর লাশ
---
কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদীতে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকাডুবির খবর পাওয়া গেছে। ঘটনার পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ছয় রোহিঙ্গা নারী ও শিশুর লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন বিষয়টি জানিয়েছেন।
ওসি আরো জানান, বুধবার সকালে টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্টে তিনজন, নোয়াখালী পয়েন্টে একজন ও বাহারছড়া পয়েন্টে দুই রোহিঙ্গার লাশ পাওয়া যায়। তাদের সবাই নারী ও শিশু।
সকালে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্টে রোহিঙ্গাদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যায় বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর প্রতিদিনই হাজার রোহিঙ্গা বিপদসংকুল নদী ও সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার হিসাব মতে, গত ১৩ দিনে বাংলাদেশে দেড় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
পালিয়ে বাংলাদেশে আসার পথে নাফ নদীতে নৌকাডুবিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় ঠিক কতজন নিখোঁজ হয়েছে, তার কোনো প্রকৃত সংখ্যা পাওয়া যায়নি।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। ‘বিদ্রোহী রোহিঙ্গাদের’ সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। সেখান থেকে পালিয়ে আসার রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে গ্রামের পর গ্রামে হামলা-নির্যাতন চালাচ্ছে। নারীদের ধর্ষণ করছে। গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
মিয়ানমার সরকারের বরাত দিয়ে জাতিসংঘ গত ১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর গত এক সপ্তাহে ৪০০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭০ জন ‘রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী’, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, দুজন সরকারি কর্মকর্তা এবং ১৪ সাধারণ নাগরিক।
মিয়ানমার সরকারের আরো দাবি, ‘বিদ্রোহী সন্ত্রাসীরা’ এখন পর্যন্ত রাখাইনের প্রায় দুই হাজার ৬০০ বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এখনো রাখাইন রাজ্যে থাকা মুসলিমদের মধ্যে মাইকে প্রচার চালাচ্ছে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।