মিয়ানমার সীমান্তে বিজিপির গুলিতে রোহিঙ্গা দম্পতি নিহত
---
কক্সবাজার প্রতিনিধি : দুই প্রতিবেশী দেশের মাঝখানে কেবল কাঁটাতারের ঘেরা। ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ঢেকিবুনিয়া উত্তর পাড়া এবং এপারে বাংলাদেশের ঘুমধুম। গতকাল শনিবার ঈদের দিনে সন্তানের ফেলে আসা জামাকাপড়ের জন্য ওপারের স্বদেশের ঘরে গিয়ে লাশ হলেন হতভাগা রোহিঙ্গা দম্পতি। মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষী (বিজিপি) গতকাল ঈদের দিনেই গুলি করে হত্যা করে এই দম্পতিকে।
জানা গেছে, মিয়ানমার বাহিনীর বর্বরতার মুখে অন্যান্য রোহিঙ্গার সাথে এই দম্পতিও দেশ ছেড়ে ক’দিন আগে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে আশ্রয় নেয়। পরে জিরো পয়েন্টেও মিয়ানমার বাহিনীর গুলি থেকে রেহাই মেলার নিশ্চয়তা না পেয়ে সুযোগ বুঝে কেউ কেউ এপারের কুতুপালং ও বালুখালীতে বস্তিতে ঢুকে পড়ছে।
সীমান্তের সেই জিরো পয়েন্টে অবস্থানককারী রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ঢেকিবনিয়া উত্তরপাড়ার স্থায়ী বাসিন্দা মো. জাফরুল্লাহ (৩০) ও তার স্ত্রী আয়েশা বেগম (২০) গতকাল শনিবার সকালে একমাত্র ছেলের ফেলে আসা কাপড় আনতে যায় নিজ গ্রামের ঘরে।
স্বামী-স্ত্রী ছেলের জন্য বাড়ি থেকে জামা কাপড় নিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ফেরত আসার সময় মিয়ানমারের বিজিপির টহলদলের সামনে পড়ে তারা। আর কালবিলম্ব না করেই বিজিপি সদস্যরা রোহিঙ্গা দম্পতির ওপর গুলি বর্ষণ করে। ঘটনাস্থলেই তাদেও মৃত্যু হয়। পরে জিরো পয়েন্টে অবস্থানকারী নিহতের নিকটাত্মীয় কয়েকজন যুবক গিয়ে তাঁদের মৃত দেহ উদ্ধার করে সীমান্তের এপারে নিয়ে আসেন।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মনজুরুল হাসান খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলে বলেন, সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি তৎপর রয়েছে।
প্রসঙ্গত গত গত ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে মিয়ানমারে নতুন করে সহিংসতায় পুরো রাখাইন রাজ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতায় মিয়ানমারের সরকারের তথ্য এ পর্যন্ত ১০৬ সহ নিহত হয়েছে। এতে ১২ জন মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। কিন্তু রোহিঙ্গাদের তথ্য মতে এই পর্যন্ত ৩ হাজারের অধিক রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ, শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনার পর এ পর্যন্ত অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।