g একসঙ্গে তিন তালাক অসাংবিধানিক : ভারতীয় সুপ্রিমকোর্ট | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বৃহস্পতিবার, ২৪শে আগস্ট, ২০১৭ ইং ৯ই ভাদ্র, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

একসঙ্গে তিন তালাক অসাংবিধানিক : ভারতীয় সুপ্রিমকোর্ট

AmaderBrahmanbaria.COM
আগস্ট ২২, ২০১৭

---

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতে একসঙ্গে মুসলমানদের তিন তালাকের প্রথাকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশেও একসঙ্গে তিন তালাক নিষিদ্ধ রয়েছে।

ভারতেও দীর্ঘদিন ধরে এ প্রথা বাতিলের দাবিতে ভারতের মুসলিম নারীরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন। শায়ারা বানু নামে এক মুসলিম নারীর আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দেশটির সুপ্রিমকোর্ট ৩-২ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে তিন তালাক অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় দেয়।

রায়ে আগামী ছয় ‌মাসের মধ্যে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে তালাক সংক্রান্ত নতুন আইন তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নতুন আইন প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত একসঙ্গে তিন তালাক দেয়ার প্রথা নিষিদ্ধ থাকবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

আদালত জানায়, সুন্নি মুসলিম সমাজে প্রায় এক হাজার বছর ধরে ‘তালাক-ই-বিদাত ’ বা তিনি তালাকের প্রথা চালু রয়েছে। কিন্তু এতে সংবিধানের ১৪ ধারা লংঘিত।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারকে উদ্যোগী হয়ে আগামী ছয় ‌মাসের মধ্যে পার্লামেন্টে নুতন আইন পাস করতে হবে।
এক্ষেত্রে মুসলিম ল’ বোর্ডের মতামতও গ্রহণ করেত নির্দেশ নিতে বলে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ইসলামের চৌদ্দশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী প্রথাকে অসংবিধানিক ঘোষণা করার বিষয়ে বিচারপতিদের মধ্যে মতপার্থক্য ছিল।

প্রধান বিচারপতি জেএস খেরার ও সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারপতি আবদুল নাজির তড়িঘড়ি তিন তালাক প্রথাকে অসংবিধানিক ঘোষণা করার পক্ষে ছিলেন না।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নয়া আইন পাস না করানো পর্যন্ত এ প্রথা সাময়িক নিষিদ্ধ রাখার পক্ষে ছিলেন তারা।

প্রধান বিচারপতি জেএস খেরার বলেন, ‘তালাক-ই-বিদাত ’ প্রথা সুন্নি মুসলমানদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রায় হাজার বছর ধরে মানুষ এই প্রথা মেনে আসছেন। এতে সংবিধানের ১৪,১৫, ২১ এবং ২৫ ধারা লংঘিত হয় না।’

বিচারপতি নাজির বলেন, ‘তিন তালাক মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের অংশ এবং মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।’

কিন্তু এ দুই বিচারপতির যুক্তির বিপরীতে অবস্থান নেন বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, রোহিন্তন ফালি নারিমান এবং উদয় উমেশ ললিত।

বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির সঙ্গে একমত হতে পারছি না। তিন তালাক প্রথা ইসলামি নীতি বিরুদ্ধ। পবিত্র কুরআন শরীফে এর কোনো উল্লেখ নেই। সংবিধানের ২৫ ধারায় এই প্রথাকে মোটেও প্রশ্রয় দেয়া হয়নি। তাই খেয়ালখুশি মতো হাজার বছর পুরনো একটি প্রথাকে ব্যবহার করা উচিত নয় ’

বিচারপতি নারিমান বলেন, ‘১৯৩৪ সালে তিন তালাক প্রথা গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু এর সাংবিধানিক বৈধতা যাচাই করা উচিত।’

সুপ্রিমকোর্ট তিন তালাকের প্রথাকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর রায়কে স্বাগত জানান শায়ারা বানু।

তিনি বলেন, ‘‌আদালতের রায়কে সমর্থন করছি। মুসলিম নারীদের কাছে আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। আশা করি মুসলিম সমাজ নারীদের প্রাপ্য সম্মান দেবে। স্বাগত জানাবে আদালতের রায়কে। এখন শুধু নয়া আইন চালু হওয়ার অপেক্ষা।’

এদিকে সুপ্রিমকোর্টের রায়ে উচ্ছ্বাস জানিয়েছে ‌অল ইন্ডিয়া মুসলিম উইমেনস পারসোনাল ল’ বোর্ড।

এ জাতীয় আরও খবর