রেকর্ড রান তাড়া করে জিম্বাবুয়েকে ৪ উইকেটে হারালো শ্রীলংকা
---
নিরোশান ডিকবেলা ও আসেলা গুনারত্নের লড়াকু হাফ-সেঞ্চুরিতে রেকর্ড ৩৮৮ রান তাড়া করে জিম্বাবুয়েকে সিরিজের একমাত্র টেস্টে ৪ উইকেটে পরাজিত করেছে স্বাগতিক শ্রীলংকা।
ষষ্ঠ উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ ১২১ রানের পার্টনারশীপেই লংকানদের জয় নিশ্চিত হয়। একইসাথে কলম্বোতে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের অসাধারণ এক রেকর্ডও গড়ে শ্রীলংকা। এই পার্টনারশীপে ডিকবেলা ৮১ রানে উইলিয়ামসের শিকার হলেও অপর প্রান্তে গুনারতেœ ৮০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৩৫২ রান তাড়া করে জয় পেয়েছিল শ্রীলংকা যা এ পর্যন্ত টেস্টে তাদের সেরা অর্জন ছিল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসের এই রান এশিয়ায় কোন দলের সর্বোচ্চ ও টেস্টে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান।
গল টেস্ট জিততে পঞ্চম ও শেষ দিনে স্বাগতিক শ্রীলংকার প্রয়োজন ছিল ২১৮ রান এবং সফরকারী জিম্বাবুয়ের দরকার ছিল প্রতিপক্ষের ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭৭ রানে অলআউট হয়ে শ্রীলংকার সামনে জয়ের জন্য ৩৮৮ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেয় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৮৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেটে ১৭০ রান তুলেছিল লংকানরা। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ে ৩৫৬ ও শ্রীলংকা ৩৪৬ রান করেছিলো।
মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান সিকান্দার রাজার অপরাজিত ৯৭ ও ম্যালকম ওয়ালারের অপরাজিত ৫৭ রানের কল্যাণে ৬ উইকেটে ২৫২ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছিলো জিম্বাবুয়ে। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা রাজার মনের স্বাদ পূর্ণ হয়। ২০১৩ সালে টেস্ট অভিষেকের পর সপ্তম ম্যাচে এসে সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন রাজা।
প্রথম ইনিংসে ক্রেইগ আরভিনের ১৬০ রানের পর একই টেস্টে দুই জিম্বাবুয়ে খেলোয়াড়ের সেঞ্চুরি ঘটলো ১৭ বছর পর। সর্বশেষ ২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে একই টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন গ্র্যান্ড ফ্লাওয়ার, এন্ডি ফ্লাওয়ার ও অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেল।
এই জয় শ্রীলংকার নতুন টেস্ট দিনেশ চান্ডিমালের জন্যও অনন্য এক অর্জন। বিশেষ করে জিম্বাবুয়ের মত র্যাঙ্কিংয়ের তলানিতে থাকা দলের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে পরাজিত হবার পরে টেস্টে এই জয়টা জরুরী ছিল।
কলম্বোর আর.প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার তার লেগ স্পিন দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছেন চার উইকেট। সব মিলিয়ে ২৭৫ রানের বিনিময়ে তার সংগ্রহ ৯ উইকেট।
ডিকবেলার বিদায়ের পরে ম্যাচ সেরা গুনারত্নে সপ্তম উইকেটে দিলরুয়ান পেরেরাকে (২৯*) নিয়ে ৬৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। প্রথম ইনিংসে হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়া গুনারতেœ ১৫১ বলের ইনিংসে জিম্বাবুয়ের স্পিনারদের বেশ ভালভাবেই সামাল দিয়েছেন।
বাঁ-হাতি স্পিনার সিন উইলিয়ামসের বলে কট বিহাইন্ড হবার আগে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ডিকবেলা ১১৮ বলে ৬টি বাউন্ডারির সহায়তায় ৮১ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস উপহার দিয়ে গেছেন। রিভার্স সুইপ মারতে গিয়ে তিনি উইকেটের পিছনে রেজিস চাকাভার হাতে ধরা পড়েন। এর আগে ৩৭ রানে অফ-স্পিনার সিকান্দার রাজার বলে স্টাম্পিংয়ের সুযোগ থেকে বেঁচে যান ডিকবেলা। এরপর ৬৩ রানে আবারো রাজার বলে চাকাভার হাতে জীবন ফিরে পান। ঐ সময়ই মূলত স্বাগতিকদের জয়ের ভিত রচিত হয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে : ৩৫৬ ও ৩৭৭, ১০৭.১ ওভার (রাজা ১২৭, ওয়ালার ৬৮, হেরাথ ৬/১৩৩)।
শ্রীলংকা : ৩৪৬ ও ৩৯১/৬, ১১৪.৫ ওভার (ডিকবেলা ৮১, গুনারু ৮০*, মেন্ডিস ৬৬, করুনারত্নে ৪৯, ক্রেমার ৪/১৫১)।
ফল : শ্রীলংকা ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : আসেলা গুনারত্নে (শ্রীলংকা)
ম্যান অব দ্য সিরিজ : রঙ্গনা হেরাথ (শ্রীলংকা)