g এমআরপি পেতে আমিরাত প্রবাসীদের ভোগান্তি | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

বৃহস্পতিবার, ২০শে জুলাই, ২০১৭ ইং ৫ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

এমআরপি পেতে আমিরাত প্রবাসীদের ভোগান্তি

AmaderBrahmanbaria.COM
জুলাই ১৪, ২০১৭

---

নিউজ ডেস্ক : আধুনিক মেশিনে ঘণ্টায় এক হাজার এমআরপি পাসপোর্ট প্রিন্ট করার সুযোগ থাকলেও সংযুক্ত আরব আমিরাতে মেশিন রিডেবল পাসর্পোট (এমআরপি) জরুরি ভিত্তিতে পাওয়ার কোনো পদ্ধতি চালু না থাকায় প্রবাসীদের পড়তে হচ্ছে নানা বিড়ম্বনায়। এমআরপি নবায়ন করার পর ডেলিভারি পেতে প্রায় এক মাসের অধিক সময় লাগায় প্রবাসীদের জন্য তা কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভিসা নবায়ন করতে বা ভিসা লাগাতে পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি। সঙ্গে দিতে হচ্ছে মোটা অংকের জরিমানাও। দূতাবাসে ও কনস্যুলেটে এমআরপিসহ অন্যান্য কাজে আসা প্রবাসীরা প্রচণ্ড গরমে ঠাণ্ডা জায়গায় বসার ব্যবস্থা বা স্বল্প সময়ে কাজ সম্পন্ন করার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ ভোগান্তি চরমে উঠেছে। আরব আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এমআরপি (পাসপোর্ট) এক সপ্তাহের মধ্যে ডেলিভারি দিতে না পারলেও বাকি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রায় ৯০ শতাংশ প্রবাসীর পাসপোর্ট জমা থাকে তাদের স্পন্সর বা কপিলের হাতে। তাই অনেকে জানেন না কখন তাদের পাশপোর্ট বা ভিসা শেষ হবে। অনেক সময় ভিসা নবায়নের আগে তারা পাসপোর্ট হাতে পান। তখন দেখেন পাশপোর্টের মেয়াদ ছয় মাসেরও কম। পাসপোর্টের মেয়াদ ছয় মাসের কম থাকলে ভিসা লাগানো সম্ভব হয় না। তখন এমআরপি করতে বা নতুন করে পেতে ছুটে যেতে হয় দূতাবাসে। কিন্তু দূতাবাসে বা কনস্যুলেটে নেই মেশিন, নেই দ্রুত পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা। ফলে ভিসা লাগাতে দিতে হয় জরিমানা। মোটা অংকের এ জরিমানা কপিল বা স্পন্সর দিতে চাই না। অনেক সময় দিলেও প্রবাসীদের বেতন থেকে এ জরিমানার টাকা কেটে নেন কপিল বা স্পন্সর বা নিয়োগকর্তা। তাই অনেক প্রবাসী আবুধাবি দূতাবাসে একটি পাসপোর্ট প্রিন্টার মেশিন বসানোর দাবি জানান।

আমিরাতে আট লক্ষাধিক প্রবাসীর অধিকাংশই পরিশ্রমের কাজ করেন। তারা থাকেন বিভিন্ন প্রদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এমআরপিসহ প্রয়োজনীয় কোনো কাজে একটা দিন ছুটি নিয়ে আবুধাবি দূতাবাসে বা দুবাই কনস্যুলেটে আসলে সেখানেও তাদেরকে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সরেজমিনে দেখা যায় ৪০-৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা খুবই কষ্টকর। নেই পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা, নেই কোনো এয়ারকন্ডিশনার বা ঠাণ্ডা হাওয়া। তার ওপর অল্প কাজের জন্য কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় প্রবাসীদের। প্রবাসীরা এসব নিয়ে জানান তাদের নানা ক্ষোভের কথা। দূতাবাসে আসা চট্টগ্রামের নাজিম, জসিম, রূপক, মোর্শেদ, কুমিল্লার হেলাল, তাহের, ঢাকার করিম, হাফিজসহ আরো অনেক প্রবাসী তাদের নানা অসুবিধার কথা ক্ষোভের সঙ্গে জানান। তারা দাবি করেন পাসপোর্টের মেয়াদ পাঁচ বছরের জায়গায় ১০ বছর করার।

প্রতিবেশী দেশের পাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদি হলেও দেশের পাসপোর্ট এখনো পাঁচ বছর। ফলে নবায়ন বা নতুন এমআরপি নেওয়ার ঝামেলা বেশি হয়। প্রবাসীদের মতে, সরকার প্রবাসীদের সোনার মানুষ বললেও তারা কীভাবে রয়েছেন তার কোনো খবর নেওয়া হয় না। প্রবাসীদের রেমিটেন্সে দেশ চললেও প্রবাসীদের ভোগান্তির কোনো অন্ত নেই বলে অভিযোগ করেন তারা।

আর্জেন্ট বা দ্রুত এমআরপি পাওয়াসহ প্রবাসীদের এসব অভিযোগ ও ভোগান্তির কথা আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ডা. মোহাম্মদ ইমরানকে বলা হলে তিনি জানান, দূতাবাসে এখন আর্জেন্ট বা এক সপ্তাহের মধ্যে এমআরপি (পাশপোর্ট) ডেলিভারির কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে বিশেষ প্রয়োজনে কিছু বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলেন তিনি। দূতাবাসে প্রয়োজনের তুলনায় লোকবল কম হওয়ায় হাজার হাজার প্রবাসীকে সামাল দিতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। তবে তিনি দূতাবাস ও কনস্যুলেটে সেবার মান উন্নতকরণ ও প্রবাসীদের এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।

প্রবাসের অবিজ্ঞ মহলের মতে, এমআরপি’র মেয়াদ ১০ বছর করাসহ দূতাবাসে সেবার মান উন্নত করে প্রবাসবান্ধব সরকার প্রবাসীদের কল্যাণে আরো এগিয়ে আসলে প্রবাসীদের প্রত্যাশা কিছুটা হলেও পূরণ হবে।