সরাইলে তলিয়ে গেছে সরকারি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ : শিশু শিক্ষার্থীদের মরণফাঁদ
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন সরকারি মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ শিশু শিক্ষার্থীদের মরণফাঁদ জেলার সরাইল উপজেলার সরাইল অন্নদা সরকসরি উচ্চ বিদ্যালয় সামনে রাস্তা থেকে ছোট দেওয়ান পাড়া নিজসরাইল সৈয়দটুলা কু্টাপাড়া সামান্য বৃষ্টি হলেই সরাইল সদর ও আশপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের রাস্তা পানিতে তলিয়ে যাই। কুটাপাড়া পঁচ্শিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় । উচালিয়া পাড়া বাড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ও নওয়াগাঁও ইউনিয়নে বাড়িউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহজাদাপুর পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে শিক্ষার্থীদের মরণফাঁদে পরিনত হলেও দেখার যেন কেউ নেই। পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করায় মাঠে দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । একদিকে মাঠে পানি জমে থাকার সুযোগে স্থানীয় কিছু দখলবাজ লোক মাঠের পানিতে মৎস চাষ করে মুনাফা উপার্জন করছেন অন্যদিকে মরণফাঁদে আটকা পড়েছেন বিদ্যালয়টির তিন শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী। সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের নিজস্ব বিশাল মাঠে পানি থৈ থৈ করছে । শিক্ষাথীরা খেলা-ধূলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি জীবনের ঝুঁকিনিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। অভিবাবকরা নিরাপত্তাহীনতার আশংকায় বিদ্যালয়ে তাদের ছেলে-মেয়েদের পাঠাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যা চলমান থাকলেও বিদ্যালয়ের মাঠের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য মাঠটি খেলা-ধূলার উপযোগী করে তোলার জন্য সরকারি ও বেসরকারি কোনো পর্যায়েই কোনো উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের। স্থানীয় লোকজন জানান, ২০১৬সালের আগস্ট মাসের দিকে শাহজাদাপুর গ্রামের মনু মিয়া ও মারুফা খানম দম্পতির শিশু কন্যা বিদ্যালয়টির প্রথম শ্রেণির ছাত্রী তিশা মনি যথাসময়ে বিদ্যালয়ে এসে আর বাড়ি ফেরেনি। পরিবারের লোকজন অনেক খোজাঁখোঁিজ করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। পরদিন বিদ্যালয়ের মাঠের পানিতে তিশা মনির মৃত দেহ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন তার লাশ উদ্ধার করেন। এছাড়া চলতি বছরের গত মে মাসে বিদ্যালয়টির প্রথম শ্রেণির অপর এক ছাত্রী বিদ্যালয়ের মাঠের পানিতে পড়ে গেলে স্থানীয় লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিলে শিশু শিক্ষার্থীটি প্রাণে বেঁেচ যায়। মাঠের পানিতে একের পর এক দুর্ঘটনায় অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় দিনযাপন করছেন। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরি দাস বলেন দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকায় বিদ্যালয়ের ৩৩৯জন ছাত্র-ছাত্রীকে নানা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির বাঁধার কারনে মাঠের পানি নিষ্কাশন করা যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের মাঠের পানি নিষ্কাশন করে মাঠটি শিক্ষার্থীদের খেলা-ধূলার উপযোগী করা একান্ত প্রয়োজন। বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহন সরকার ও বিদ্যুৎসাহী সদস্য হাজী দৌলত খান বলেন, স্থানীয় কিছু লোক বিদ্যালয়ের মাঠের পানি নিষ্কাশনের পথে বালু ফেলে একটি নামায ঘর নির্মাণ করায় পানি নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে দীর্ঘদিন ধরে মাঠে পানি জমে আছে। আসছে বর্ষা মৌসুম শেষে কার্তিক মাসের দিকে এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে মাঠে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।