g ২০৪১ সালে মাথাপিছু আয় বাড়বে ১০ গুণ : প্রধানমন্ত্রী | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রবিবার, ৩০শে জুলাই, ২০১৭ ইং ১৫ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

২০৪১ সালে মাথাপিছু আয় বাড়বে ১০ গুণ : প্রধানমন্ত্রী

AmaderBrahmanbaria.COM
জুন ২১, ২০১৭
news-image

---

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০৪১ সালে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ১০ গুণের বেশি বাড়বে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন মাথাপিছু আয় ১৬০২ ডলার, আর ২০৪১ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ১২ হাজার ডলারে। ২০৪১ সালে স্বাধীনতার ৭০তম জয়ন্তীতে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

বুধবার সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য দিদারুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৭০তম জয়ন্তী উদযাপন করবে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হবে এবং জনপ্রতি মাথাপিছু আয় প্রায় ১২ হাজার ডলারে উন্নীত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের বাংলাদেশের অর্থনীতি এশিয়ার আঞ্চলিক অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। বাংলাদেশের অনুসৃত উন্মুক্ত অর্থনীতি উপ-আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে উইন-উইন অবস্থান তৈরি করে সাফল্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সে লক্ষ্যে শিল্প বিকাশ ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে বর্তমান সরকার বিদ্যমান বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত করার লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পে বিভিন্ন পরিসেবা, ভূমির নিশ্চয়তা, প্রতিযোগিতামূলক প্রণোদনা এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস-প্রদানসহ বিনিয়োগ বান্ধব আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।’

অর্থনৈতিক উন্নতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত চারটি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের চূড়ান্ত লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, মেঘনা ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, আবদুল মোনেম অর্থনৈতিক অঞ্চল, গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ, আমান ইকোনমিক জোন, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ এবং বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল, কোনাবাড়ী, গাজীপুর।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এছাড়া ১০টি বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রি-কোয়ালিফিকেশন লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাস্তবায়ন অগ্রগতি হচ্ছে। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অভ্যন্তরে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করার জন্য এ পর্যন্ত আটটি প্রজেক্ট ক্লিয়ারেন্স প্রদান করা হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে এ পর্যন্ত মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৯০৪.১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে মোট কর্মসংস্থানের পরিমাণ সাত হাজার ৭৮১ জন।’ তিনি বলেন, ‘পিপিপি ভিত্তিতে মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং মিরেরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল (প্রথম পর্যায়)-এ ডেভেলপার নিয়োগ করা হয়েছে। এ সকল ডেভেলপার বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এছাড়াও বৃহৎ ও বিশেষায়িত, বিনিয়োগকারীদের মিরেরসরাই ও শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে সরাসরি জমি বরাদ্দের উদ্দেশ্যে দরখাস্ত আহ্বান করে আবেদন পত্রসমূহ মূল্যায়ন চলছে। এ সকল আবেদনকারীই বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নয়ন সূচিত পরিকল্পনার ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকারি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উন্নয়নেও নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং নতুন বাজেটেও এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশব্যাপী সরকার একশত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হবে। শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২১ সালে আইটি সেক্টরে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এবং এ সেক্টর থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করার টার্গেট নিয়ে কালিয়াকৈরে ৩৫৫ একর জমির ওপর পিপিপি’র ভিত্তিতে হাইটেক পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অর্জনে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। একইভাবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)’র সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যসমূহ ২০৩০ সালের মধ্যেই অর্জন করে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী এসডিজি বাস্তবায়নেও রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০৩০ সাল নাগাদ এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ও প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম দেশসমূহের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক উন্নয়ন জরুরি।’ তিনি বলেন, ‘এছাড়া, বিসিআইএম, বিবিআইএন, সার্ক, আসিয়ান, বিএমসটেক, সাসেক এবং পূর্ব ইউরোপ পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্যেও প্রবেশাধিকার দ্রুত ও উন্নত আঞ্চলিক সহযোগিতা, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, ব্যবসা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে আরও সহজতর ও গতিশীল করবে। সরকার বেসরকারি খাতের উন্নয়নের জন্য প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট পলিসি কোঅর্ডিনেশন কমিটি (পিএসডিপিসিসি) গঠন, সুসংহত শিল্পোন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজ-বিইজডএ), বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা-বিআইডিএ), অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য পিপিপি অফিস, দেশি ও বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগ উন্নয়নে সময়োপযোগী শিল্পনীতি, রপ্তানি নীতি এবং সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিতকরণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস’র (পিডব্লিউসি) ২০১৫ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ বিশ্বের ২৯তম এবং ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। যার বর্তমান অবস্থান ৩১তম।’

এ জাতীয় আরও খবর