রাজহাসের গ্রাম বাঞ্ছারামপুরের রাধানগর
ফয়সল আহমেদ খান , বাঞ্ছারামপুর : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার অসাধারন সুন্দর গ্রাম রাধানগর। গ্রামের বেশির ভাগ দরিদ্র পরিবারের নারীরা রাজহাঁস পালন করে সংসারের অভাব-অনটন দূর করার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হয়ে উঠছে। রাজহাঁস পালন করে সন্তানদের পড়ালেখার খরচ জোগানোসহ সংসারের যাবতীয় ব্যয় মেটাচ্ছে জীবনসংগ্রামী এসব নারী।
কথা বলে জানা গেছে, দু’দশক আগে এ অঞ্চলে রাজহাঁস পালন শুরু হয়। যত দিন যাচ্ছে ততো রাজহাঁসের সংখ্যা বাড়ছে।
সকালে বাড়ি থেকে হেলতে দুলতে রাজহাঁস আহারের সন্ধানে বের হয়। নদী, বিল বাঁওড় ও ডাঙ্গা থেকে এরা খাবার খায়। সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরে আসে। বাড়ি ফিরলে হাঁসকে ধানের কুঁড়া, ভাত বা সবজির ফেলে দেয়া অংশ খেতে দেয়া হয়।
গ্রামের লাকি বেগম বলেন, তার ৫টি রাজহাঁস আছে। একটি মেয়ে হাঁস বছরে দু’বার ডিম পাড়ে। একেক বাড়ে ১০-১১টি করে ডিম দেয়। ডিম ফুটিয়ে এক দিন বয়সের এক জোড়া বাচ্চা ৩শ’ টাকায় বিক্রি হয়। একটি হাঁস থেকে বছরে ৩ হাজার টাকা আয় হয়ে থাকে। আর একটি বড় হাঁস বিক্রি হয় ৬শ’ টাকায়।
সদর উপজেলার রাধানগরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি পরিবারেই পাঁচ-ছয়টি করে রাজহাঁস রয়েছে। উজানচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাদিদ আল রহমান জনি বলেন,-‘ আমার এলাকার প্রায় সব পরিবারই রাজহাঁস পালন করে।
রাধানগর গ্রামের আয়না খাতুন জানান, একেকটি রাজহাঁস তিন থেকে আটটি ডিম দেয়। চার মাস বয়সের একটি রাজহাঁস থেকে চার-পাঁচ কেজি মাংস পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আ.রাজ্জাক জানান,বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রাধানগর,কালিকাপুর,উজানচর,মরিচাকান্দি,বাহেরচর,শিবপুর,বিষনারামপুর,শান্তিপুর,ফরদাবাদ,ছলিমাবাদসহ বিভিন্ন গ্রামে ব্যাপকভাবে রাজহাঁস পালন করা হয়। তিনি আরো জানান, হাঁস পালন লাভজনক হওয়ায় অনেকে হাঁসের খামার গড়তে উদ্যোগী হচ্ছে। কেউ কেউ মাছ চাষের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে রাজহাঁস পালন করছে বলেও জানান তিনি। প্রায় ৩ হাজার খানেক রাজহাঁস পালন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজহাঁসের রোগ-ব্যাধি কম হয়। ভয় শুধু ডাক প্লেগ নিয়ে। এ রোগের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন মাঝে মাঝে দিলে আর ভয় থাকে না