বাঞ্ছারামপুরে সরকারি হাসপাতালে টর্চের আলোয় ব্যতিক্রমী ঝটিকা অভিযান
---
ফয়সল আহমেদ খান,বাঞ্ছারামপুর : বুধবার।আকাশে বিদ্যুতের চমকানী।বাইরে ঝড়ো হাওয়া।কাল বৈশাখী ঝড়ের তান্ডব শুরু হলো বলে…এমনই অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর সদরে অবস্থিত একমাত্র ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ! সরকারি হাসপাতালে রাতের বেলায় টর্চেও আলোর সাহায্যে আকষ্মিক অভিযানে এলেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শওকত মাহমুদ,উপজেলা প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলমসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও রিপ্রেজেন্টেটিভদের সংগঠন ফারিয়ার সভাপতি মো. মাসুম মিয়া মো.মহিউদ্দিন,মোকবুল হোসেন সহ সাংবাদিক প্রতিনিধিরা।
কেন এই আকষ্মিক অভিযান ?-এমন প্রশ্নের জবাবে অভিযানে পরিদর্শক জনৈক সরকারি কর্মকর্তা বলেন,-‘সম্প্রতি বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতলের অব্যবস্থাপনা,চিকিৎসক সংকট,চলমান বেশ কয়েকটি ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও ক্লিনিংকের বিরুদ্ধে লাইসেন্স না থাকা সত্বেও চিকিৎসা বানিজ্যের বিস্তর অভিযোগ,ডাক্তার ও নার্সদের আবাসিক অতি ঝুকিপূর্ণ আবাসিক ভবন সংস্কার,৫০ শয্যা হাসপাতাল চালু না হওয়ার পেছনের নৈপথ্য কারন,এম্বুলেন্স বানিজ্য ও নবনির্মিত ৫০ শয্যা হাসপাতালটির নির্মানের মান নিয়ে পুরো এলাকাসহ সম্প্রতি দৈনিক আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডটকম একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তা সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো.নাসিম পর্যন্ত পৌছুলে কতৃপক্ষের টনক নড়ে বলে জানা গেছে। পরবতীতে হাসপাতালের কায্যক্রম নিয়ে ব্যাপক সমাােচনা হওয়ার কারন খতিয়ে দেখা কেমন হয়েছে তা সরেজমিনে জানার জন্যই এমন পরিদর্শন।
ঘন্টাব্যাপী খুটিয়ে খুটিয়ে হাসপাতলের সার্বিক অবস্থা দেখে পরিদর্শকরা স্পষ্টত অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
উল্রেখ্য সম্প্রতি জনপ্রয়ি অনলাইন পোর্টাল আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডটকম বাঞ্ছারামপুর ৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতল নিয়ে দীর্ঘ সমস্যভিত্তিক সিরিজ রিপোর্ট প্রকাশ করলে তা পাঠক মহলে ব্যাপক আলোচিত হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী বলেন,-‘৫০ শয্যা হাসপাতালটি তো এখনো উদ্ধোধনই হয়নি…তার আগেই দেয়ালের চুনকাম,ডাম্পিংসহ নানান উপকরন নষ্ট হয়ে গেলো!
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন,-‘চিকিৎসকদেও আবাসিক ভবনে যে কোনো মূহূর্তে দূঘটনা ঘটতে পারে।অবিলম্বে মান্ধাত্বার আমলের অতি ঝুকিপূর্ণ ভবনগুলো ভেঙ্গে নতুন করা দরকার।
দলের প্রধান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন,-‘নানা জটিলতায় ৫০ শয্যা হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব্ হচ্ছে না।সে সমস্যাগুলো চিহ্নিত কওে দ্রুত ৫০ শয্যা কি কওে চালু করা যায়-তার ব্যবস্থা করতে হবে।তিনি আরো বলেন,৭ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ৫০ শয্যার হাসপাতালটির ঠিকাদার তার কাজ মোটেও ঠিকভাবে করেননি।অথচ ঠিকাদার বিল নিয়ে চম্পট ! বিষয়টি দু:খজনক।
ছাত্রলীগ নেতা মাসুম,মহিউদ্দিন,মোকবুল বলেন,-‘হাসপাতালে ভালো এম্বুলেন্স রেখে ‘ডিজেল-পেট্রোল-গ্যাস’বাহানায় এম্বুলেন্স ড্রাইভার এম্বুলেন্স চালানো যাবে না এমন দাপট দেখিয়ে নিজেই বিগত দেড় বছর ধওে প্রকাশ্যে নিজেই বেশ কয়েকটি বেসরকারি এম্বুলেন্স ভাড়ায় এনে তা হাসপাতালের করিডোওে রেখেই জ্জগুন বেশী ভাড়ায় রোগী বানিজ্য করছেন।
হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ডা. তোফায়েল বলেন, ‘যে সমস্ত ভবনে নার্স,ডাক্তারগন থাকেন তা যে কোনো মুহুর্তে ভেঙ্গে পড়ে ডাক্তাররাই রোগী হয়ে যেতে পারেন।এসব ঝুকিপূর্ণ ভবন একমাসের মধ্যে ভেঙ্গে নতুন ভবন দিন ?
সাংবাদিকদেও মধ্য থেকে ফয়সল আহমেদ বলেন,-
‘ভবন তৈরী করা দরকার।চিকিৎসক সংকট দূও করতে হবে,ভালোমানের ওষূধ দেয়া হয় না,,হাসপাতালের ওয়ার্ডে বিদ্যুত চলে গেলে মোমবাতি দিয়ে গরমের মধ্যে রোগীরা ঘূমাতে পারেন না,সাপ্লাইয়ের পানি দূষিত,সন্ধ্যার পর পর নিত্যদিন হাসপাতাল কম্পাউন্ডে মাদকসেবীরা মাদক সেবনের জন্য আসে,।কম্যিইনিটি ক্লিনিকগুলোর ব্যবস্থাপনা প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে।
সাংবাদিক সালমা আহমেদ দাবী করেন, উপজেলার বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোর ৯০ ভাগেরই যথাযথ অনুমোদন নেই।সেখানে অ-ডাক্তারগন েেরাগী সেবা দিচ্ছেন।কম্পাউন্ডাররা হয়ে গেছেন প্যাথলজিষ্ট,নার্স কিংবা ডাক্তার।সেটি খতিয়ে দেখে লাইসেন্সবিহীন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো রোগী বানিজ্য বন্ধ করতে হবে।তা ছাড়া গাইনী চিকিৎসক দেয়ার দাবী করেন তিনি’।
পরিদর্শকরা সবার কথা আমলে নিয়ে জানান,সব গুলো আমরা জেলা পর্যায়ে পাঠাবো।দ্রুত ব্যবস্থা নিতে যা যা করনীয় তার সবই আমরা করতেই এখানে রাতে বেলায় টর্চেও আলোয় ঘুওে ঘুওে দেখেছি।
উল্রেখ্য সম্প্রতি জনপ্রয়ি অনলাইন পোর্টাল দৈনিক আমাদেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাঞ্ছারামপুর সরকারি হাসপাতল নিয়ে দীর্ঘ এক সমস্যভিত্তিক রিপোর্ট করলে তা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো.নাসিমের নজরে আসে।পরবর্তীতে তা জেলা হয়ে উপজেলা পর্যায়ে সংবাদেও সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এমন পরিদর্শন হয় বলে জানা গেছে।