তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থান, এ পর্যন্ত আটক লক্ষাধিক, গ্রেফতার ৫০ সহস্রাধিক
---
তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের ৯ মাস পর এপর্যন্ত দেশটিতে আটক করা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৬০ জনকে যাদের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ৫০ সহস্রাধিক। গত বছরের জুলাই মাসে তুরস্কে এক ব্যর্থ অভিযানের পর গণগ্রেফতার শুরু হয়। ওই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর দেশটির সরকারি মিডিয়া জানায় ৩৬ জন অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করে এবং ২৪৯ জন মারা যায়। সিএনএন
একই সময়ে তুরস্কে ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছে যাদের মধ্যে ৫০ হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে। এ হিসেব দিয়েছে তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সিএনএন’এর প্রখ্যাত সাংবাদিক ক্রিস্টিয়ান আমানপুরকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভোসগলু বলেন, পুনরায় কোনো অভ্যুত্থান যাতে না ঘটে এবং যারা এধরনের অভ্যুত্থানকে সমর্থন করেছে তাদের বিচারের আওতায় আন সরকারের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
তুরস্কে ওই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইয়েপ এরদোগানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তিনি ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে ব্যাপক দমন অভিযান ও সংস্কারের নামে আইন পরিবর্তন করছেন। গত বছরের জুলাই পর্যন্ত তুরস্কের ১ হাজার ১৯ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর তা ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১০ হাজার ৭৩২ জনে। দেশটির সরকার বলছে অভ্যুত্থনে সেনাবাহিনীর দেড় শতাংশ জড়িত ছিল। সেনাবাহিনীর ৭ হাজার ৪৬৩ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয় যাদের মধ্যে ১৬৮ জন জেনারেল রয়েছেন। এরফলে সেনাবাহিনীতে বিপদজনকভাবে লোকবলের ঘাটতি দেখা যায়।
অভ্যুত্থানের ৩ দিনের মাথায় বিচারবিভাগের ২’শ কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। প্রমাণ না থাকার পরও এধরনের আটক অভিযান অব্যাহত থাকে যা থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরা পর্যন্ত রেহাই পাননি। আইনজীবী ও বিচারক মিলে ২ হাজার ৫৭৫ জন গ্রেফতার হন। হাজার হাজার সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের আটকের পর ২০৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের অনেককে চাকুরিচ্যুত করা হয়। মিডিয়ার ওপর ব্যাপক সেন্সরশিপ আরোপ হয়। হাজার হাজার সাংবাদিকের পাসপোর্ট আটক করা হয়। ইন্টারটেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর কড়া নজরদারি আরোপ করা হয়। ২ হাজার ৭০৮জন সাংবাদিককে চাকুরিচ্যুত করা হয়। ১৩১ জন সাংবাদিক কারাগারে রয়েছেন। ১৭৯টি মিডিয়া প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।