বৃহস্পতিবার, ৯ই মার্চ, ২০১৭ ইং ২৫শে ফাল্গুন, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

AmaderBrahmanbaria.COM
মার্চ ৭, ২০১৭

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে লাখো মানুষের সামনে জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তির বাণী শোনান। এই দিনে তিনি ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসভায় ঐতিহাসিক ভাষণে জাতিকে শুনিয়েছিলেন মুক্তির বাণী—‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এরই মধ্য দিয়েই স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন ইতিহাসের এ মহানায়ক।

৭ মার্চের ভাষণ দেওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (ফাইল ছবি: ফোকাস বাংলা)দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

৭ মার্চের উত্তাল সেই দিনটিতে ঢাকা পরিণত হয়েছিল মিছিলের শহরে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মানুষ পায়ে হেঁটে, বাস-লঞ্চে কিংবা ট্রেনে চেপে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে সমবেত হয়েছিলেন। লাখ লাখ মানুষ সমবেত হয়েছিলেন সেদিন।

সেদিন বিকেলে সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি আর হাতাকাটা কালো কোট পরে বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু দৃপ্ত পায়ে মঞ্চে উঠলেন। দাঁড়ালেন মাইকের সামনে। আকাশ-কাঁপানো স্লোগান আর মুহুর্মুহু করতালির মধ্যে হাত নেড়ে অভিনন্দন জানালেন অপেক্ষমাণ জনসমুদ্রের উদ্দেশে। তারপর শুরু করলেন তার সেই ঐতিহাসিক ভাষণ। তিনি বললেন—‘তোমাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো। মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ! এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’

এই ভাষণের মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে তুলে আনেন এক অনন্য উচ্চতায়। এতে সামরিক আইন প্রত্যাহার, সৈন্যবাহিনীর ব্যারাকে প্রত্যাবর্তন, শহীদদের জন্য ক্ষতিপুরণ ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের চারদফা দাবি উত্থাপন করেন তিনি।

রেসকোর্স ময়দান থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সরাসরি প্রচারের সব আয়োজন ছিল ঢাকা বেতার কর্তৃপক্ষের। প্রচার শুরুও হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান সরকার প্রচার বন্ধ করে দিলে বেতারের সব বাঙালি কর্মচারী বেতার ভবন ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের সম্প্রচার কার্যক্রম। গভীর রাতে অবশ্য বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্প্রচারের অনুমতি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার।

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ স্বাধীনতার ইতিহাসে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় ঘটনা। মূলত বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের আহ্বানেই জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ২৫ মার্চের কালরাতে পাকবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। নয়মাসের যুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের।

দিনের কর্মসূচি

দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে রয়েছে, ভোর সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, সকাল ৮টায় দেশের সব ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, থানা, উপজেলা, মহানগর ও জেলাগুলোর প্রতি পাড়া-মহল্লায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার এবং দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সভা-সমাবেশের আয়োজন।