খোদার আরশে তাঁদের নাম সোনার হরফে লেখা থাকবে
এম.মনসুর আলী: মানুষ মানুষের জন্য/জীবন জীবনের জন্য/একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না/ও বন্ধু…. উপরের ছবিটি দেখে ভূপেন হাজারিকার এই বিখ্যাত গানটির কথা হঠাৎ মনে পড়ে যাই ।ছবিতে দেখা যাচ্ছে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা প্রশাসক সৈয়দা নাহিদা হাবিবা খোলা নীল আকাশের নীচে শীতলপাটিতে নয়,ধূলোময় দূর্বাঘাসের উপর বসে একটি অসুস্থ ছেলেকে নিজ হাতে মায়ের মতো পরম মমতায় মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন ।তাঁর পরিচ্ছন্ন পোশাক ধূলি–বালিতে ধূলান্জলী হচ্ছে ,সেদিকে তাঁর খেয়াল নেই।চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন অপলক দৃষ্টিতে দৃশ্যটি অবলোকন করছেন!একজন ,পাশের জনকে কানে কানে বলছেন, সে-কি মানুষ না ফেরেস্তা!!
ছেলেটি সরাইল উপজেলায় স্কাউট সমাবেশে এসে এক পর্যায়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে।মান্যবর সৈয়দা নাহিদা হাবিবা তাঁর অধীনস্থদের নির্দেশ না দিয়ে আত্মজনের মতো আদরে-সোহাগে,যত্নে ও উৎসাহমূলক বাক্য বলে(তুমি ভালো হয়ে গেছো,তোমার কিচ্ছু হয়নি ইত্যাদি)মনোবল ভেঙ্গে পড়া অসুস্থ ছেলেটিকে সুস্থ করে তুললেন।
সংবিধান তাঁকে অনেক ক্ষমতা প্রদান করেছেন ।এখানে তিনি তাঁর অধীনস্থদের অসুস্থ ছেলেটিকে যত্ন করার কিংবা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিতে পারতেন ।কিন্তু তা না করে তিনি নিজেই মমতাময়ী মায়ের মতো ছেলেটিকে বুকে টেনে নিলেন।সেবা যত্নে সুস্থ করে তুললেন।
আমি অনেক মহিলাদের দেখেছি আপন বোনের ছেলের মুখে খাবার তুলে দিতে অস্বস্থি ও ঘৃণাবোধ করে!সেখান একজন ক্ষমতাবান প্রশাসক ,উচ্চশিক্ষিত মানুষ ঘৃণাবোধ না করে অন্যের ছেলের মুখে নিঃসংকোচে খাবার তুলে দিচ্ছেন!প্রিয় পাঠক আমিও তাই আপনাদের কানে কানে বলতে চাই, সে-কি মানুষ, না ফেরেস্তা!এই নশ্বর পৃথিবীতে তাঁদের কথা কেউ মনে রাখতে না পারে কিন্তু খোদার আরশে তাঁদের নাম সোনার হরফে লেখা থাকবে।ইনশাল্লাহ।