চল্লিশের পরে আইনজীবী সনদ নেওয়া যাবে না : সুপ্রিম কোর্ট
---
আইনজীবী হিসেবে সনদ নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স নির্ধারণ করে দিচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এক্ষেত্রে ৪০ বছরের পর বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে আর আইনজীবী হিসেবে সনদ নিতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের মামলার রায়ে আদালত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছেন।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী।
পরে আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী বলেছেন, আদালত বলেছেন ৪০ বছরের পর আইনজীবী হওয়া যাবে না। তাছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই বছর মেয়াদী এলএলবি সনদদারীরা বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। আর জেলা জজ পর্যায় থেকে যারা অবসর নিয়েছেন তারা হাইকোর্ট বিভাগের নিচে অন্য কোনো আদালতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে পারবেন না।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, আপিল বিভাগ আইনজীবী হওয়ার ক্ষেত্রে বয়সের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেবেন। যারা বিচার বিভাগ থেকে অবসর নিয়েছেন তাদের নিম্ন আদালতে আইন পেশায় অনুশীলনের সুযোগ আর থাকবে না। নিম্ন আদালতের বিচারকরা ইচ্ছা করলে শুধু হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করতে পারবেন। হাইকোর্ট থেকে যারা রিটায়ার করবেন তারা শুধু আপিল বিভাগে প্র্যাকটিস করতে পারবেন। আর আপিল বিভাগ থেকে যারা রিটায়ার করবেন তাদের প্র্যাকটিসের কোনো সুযোগ নাই।
দুই বছর মেয়াদী কোর্স সম্পর্কে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আপিল বিভাগ বলেছেন দুই বছরের কোর্স তারা এপ্রোভ করবেন না। তিন বছর অথবা চার বছর মেয়াদী কোর্সধারী হতে হবে। আমি বলেছিলাম, আইনজীবী হওয়ার বয়সসীমা ৩৫ বছর করতে। তবে এখনো পর্যন্ত আলাপ-আলোচনায় বুঝা গেছে উনারা ৪০ এর পক্ষে।
উল্লেখ্য, বার কাউন্সিলের সনদ গ্রহণের পরীক্ষায় দুই বছরের সনদ নিয়ে জটিলতার প্রেক্ষিতে হওয়া রিটের রায়ে ২০১৬ সালের ২৫ জুলাই এলএলবি কোর্স সম্পর্কে কিছু নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশও দেন আদালত। হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় আপিল করেছিল। আজ বুধবার দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের আপিল খারিজ করেছেন। এছাড়া এই মামলায় অন্য যেসব বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষভুক্ত হয়েছিল আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। এ সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা পূর্ণাঙ্গ রায়ে আসবে বলে জানিয়েছেন আপিল বিভাগ।