g চার দফা সময়ের পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি ৩৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রবিবার, ৩০শে জুলাই, ২০১৭ ইং ১৫ই শ্রাবণ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

চার দফা সময়ের পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি ৩৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

AmaderBrahmanbaria.COM
মার্চ ৭, ২০১৭

---

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ছয় বছরে চার দফা সময় দেয়া পরও আইনের শর্ত মেনে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি পুরনো ৩৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কেউ কেউ আংশিক গেছে, কেউ জমি কিনেছে, কেউ নকশা পর্যায়ে আছে। আবার জমি কিনেনি এমন বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়মিত সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক সভা আহ্বান করে না। চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সলর, প্রো- ভাইস চ্যান্সলর এবং কোষাধ্যক্ষ নেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কয়েকটির। প্রতি বছর নিরীক্ষিত বার্ষিক হিসাবও দাখিল করে না তারা।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালগুলোর এসব সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির এক যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিজস্ব ক্যাম্পাসে না যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে, তা ঠিক করতেই এই বৈঠক করা হয়। তবে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের জানান, চার সদস্যের কমিটির প্রধান করা হয়েছে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক আকতার হোসেনকে। কমিটির অন্য সদস্যেরা হলেন- ইউজিসির সদস্য এ কে এম শাহনেওয়াজ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবুল হাসান চৌধুরী, ইউজিসির উপ-পরিচালক জেসমিন পারভীন। জেসমিন পারভীনকে কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করা নয়। এগুলো আরো ভালোভাবে চলুক, মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করুক এটা নিশ্চিত করাই সরকারের দায়িত্ব। সমস্যা চিহ্নিত করার জন্য কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটি আগামী ৩০ জুনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেবে। তবে এর আগেও তারা সময়ে সময়ে জরুরি ভিত্তিতে সুপারিশ করবে। এর ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দেশের ৯৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাত্র ১৫টি আইন অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে নিজস্ব ক্যাম্পাসে পুরোপুরি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অভিযুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে একাধিক সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন। এর আগেও স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি এমন ৩৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এ রেড অ্যালার্ট জারির ঘোষণাও দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নিজেই। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি।
হাইকোর্টের রায়ের আলোকে গত বছরের ২৫ জুলাই দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম এবং দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। শুরুর দিকের এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে অবাধে সার্টিফিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ ছিল। নিয়মবহির্ভূতভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক শাখা-প্রশাখা খুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করে। হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী বন্ধ করা দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ওই প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের কাছে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ৯৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি অনুমোদন রয়েছে। এর মধ্যে ৮০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। আইন অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে নিজস্ব ক্যাম্পাসে পুরোপুরি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে মাত্র ১৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসে আংশিক শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে ১৬টি, ফাউন্ডেশনের জমিতে ক্যাম্পাস করেছে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়। ৩৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করছে। কম জমিতে ক্যাম্পাস নির্মাণাধীন রয়েছে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের।
ইউজিসি জানিয়েছে, নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে এমন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ, ইনডিপেনডেন্ট ইউনির্ভাসিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, গণবিশ্ববিদ্যালয়, সিটি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রামের ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি, শরীয়তপুরের জেডএইচ সিকদার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়, নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়।
নিজস্ব ক্যাম্পাস করে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করলেও এখনো ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় মহাখালীতে, সিটি ইউনিভার্সিটি গ্রিন রোডে, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বনানীতে, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল গ্রিন রোড ও বনানীতে, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি মোহাম্মদপুরে আংশিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। একইভাবে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অব সায়েন্সেস, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, রয়েল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটি নির্ধারিত পরিমাণ জমিতে আংশিক শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে।
ফাউন্ডেশনের জমিতে অবকাঠামো নির্মাণ করে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, নারায়ণগঞ্জের রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়।
নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম জমিতে ক্যাম্পাস নির্মাণ করছে প্রাইম ইউনিভার্সিটি, সেন্ট্রাল উইমেন ইউনিভার্সিটি।

এ জাতীয় আরও খবর