‘কানের দুল না দেওয়ায় খুন করা হয় উর্মিকে’
নিউজ ডেস্ক : স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যাবেন মাসুদ রানা। তাই স্ত্রীর জন্য গহনা ধার আনতে যায় চাচি উর্মির কাছে।
চাচি গহনা দিতে রাজি না হওয়ায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে বটি দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন মাসুদ। ২০১৬ সালের ৫ নভেম্বর রাজধানীর বংশালে নিজ বাসায় গলাকেটে হত্যা করা হয় গৃহবধূ উর্মিকে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আজগর আলীকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু এই খুনের কোনো কিনারা করতে না পারায় তদন্তে নামে ডিবি পুলিশ। উর্মির খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে তদন্ত করতে গিয়ে বের হয়ে আসে মাসুদ রানার নাম। শনিবার রাতে মাসুদ রানাকে গ্রেপ্তারের পর রহস্য উদঘাটিত হয় উর্মি হত্যার। আজ রবিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
তিনি জানান, হত্যাকারী ভাতিজা মাসুদকে শনিবার রাতে বংশাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এসময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও নিহত উর্মির ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়। তিনি জানান, গত ৫ নভেম্বর মাসুদ রানা স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যাবেন। কিন্তু কানের দুলের বায়না ধরে স্ত্রী। কানের দুলের সন্ধানে চাচী উর্মির কাছে যায় ভাতিজা মাসুদ রানা। কিন্তু চাচার অনুমতি ছাড়া কানের দুল দেওয়া যাবে না বলে জানালে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় মাসুদ। এরপর চাচি চড় মারলে ক্ষিপ্ত হয়ে মাসুদও ফল কাটার ছুরি দিয়ে চাচিকে মারার চেষ্টা করে। তখন চাচি রান্না ঘর থেকে বটি নিয়ে তেড়ে আসে। এসময় দুই জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে বাথরুমে উর্মি আশ্রয় নিলে মাসুদ বাথরুমের দরজা ভেঙে বটি কেড়ে নিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
ঘটনার পর মাসুদ রক্তাক্ত পোশাক খুলে চাচার পোশাক পড়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে একটি মাদ্রাসায় আশ্রয় নেয়। এরপর দীর্ঘ সময় ক্লুলেস ঘটনায় একাধিকবার স্বামী আজগরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোনো তথ্য পায় নি পুলিশ। এরপর নিহত উর্মির ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে জুয়াড়িদের কাছ থেকে সেটি উদ্ধার করা হয়। জানা যায়, মাসুদ রানা জুয়ার টাকা জোগাড় করতে না পেরে মোবাইল ফোনটি বিক্রি করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। রবিবার মাসুদকে আদালতে তোলা হবে এবং সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবে বলেও জানান আব্দুল বাতেন।