পৃথিবী স্থির, সূর্য পৃথিবীর চার দিকে ঘুরছে- সুশান্ত দেব
‘পৃথিবী সূর্যের চতুর্দিকে ঘুরছে’Ñ বিজ্ঞানীদের গবেষণালব্ধ সর্বজনস্বীকৃত এ মতটি ভুল আখ্যা দিয়ে উল্টো ধারণা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার চুন্টা এলাকার নরেন্দ্র দেবের ছেলে টেইলার সুশান্ত দেব সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সরাইল প্রেস কাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি প্রচলিত এই ধারণার বিপে যুক্তিসহ লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেছেন ‘পৃথিবী স্থির, সূর্য পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘুরছে।’
১৯৯০ সালে চুন্টা এসি একাডেমি থেকে নবম শ্রেণী পাস করে চুন্টা বাজারে টেইলারের কাজ করার পাশাপাশি ১০ বছর পৃথিবী ঘূর্ণনের প্রচলিত তথ্য নিয়ে গবেষণা করে এটি ভুল আখ্যা দিয়ে তার ধারণার পে তিনি ছয়টি যুক্তি তুলে ধরেন ওই সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে সুশান্ত দেব বলেন, গবেষণার শুরুতে তিনি প্রথমে একটি ইটের টুকরা উপরের দিকে ফেলেন। পৃথিবী ঘূর্ণনের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী টুকরাটি তার কাছ থেকে ২.২০ কি.মি. দূরে পড়ার হিসাব করলেও কাছেই পড়ে। সেই থেকে তিনি ধারণা করেন সূর্য নয়, পৃথিবী স্থির। সূর্য পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘুরছে।
এ বক্তব্যের পে তার ছয়টি যুক্তি হলোÑ
১. ঢাকা থেকে ৪২২০ কি.মি. পশ্চিমে অবস্থিত কোনো স্থানে যেতে একটি বিমান যদি ঢাকা থেকে ঘণ্টায় ৫০০ কি.মি. বেগে যায়, আর পৃথিবী যদি ঘণ্টায় ১৬১০ কি.মি. বেগে পশ্চিম দিক হতে পূর্ব দিকে ঘুরে তাহলে বিমানটি গন্তব্যে পৌঁছতে প্রচলিত ধারণায় সময় লাগবে ২ ঘণ্টা। কিন্তু তার ধারণায় পৃথিবী স্থির বলে সময় লাগবে প্রায় ৮ ঘণ্টা ২৬ মিনিট।
২. ঢাকা থেকে ৪২২০ কি.মি. পূর্ব দিকে অবস্থিত কোনো স্থানে যেতে একটি বিমান যদি ঢাকা থেকে ঘণ্টায় ৫০০ কি.মি. বেগে যায় আর পৃথিবী যদি ঘণ্টায় ১৬১০ কি.মি. বেগে পশ্চিম দিক হতে পূর্ব দিকে ঘুরে তাহলে বিমানটি (১৬১০-৫০০)=ঘণ্টায় ১১১০ কি.মি. পূর্ব দিকে না গিয়ে পশ্চিম দিকে সরে যাবে। কিন্তু বাস্তবে এমনটি না হওয়ায় এতে তার ধারণা পৃথিবী স্থির।
৩. প্রচলিত ধারণা মতে পৃথিবী যদি ঘণ্টায় ১৬১০ কি.মি. বেগে নিররেখায় নিজ অরে উপর ঘুরে তাহলে বিমানের কোনো গতির প্রয়োজন নেই। আকাশে এক জায়গায় বিমান দাঁড়িয়ে থাকলেই গন্তব্য স্থানে পৌঁছে মাটিতে নামতে পারত।
৪. পৃথিবীর যদি গতি থাকে তাহলে যুক্তরাজ্য থেকে আফ্রিকাগামী বিমান ব্রাজিল চলে আসবে। ফের আফ্রিকা থেকে যুক্তরাজ্যগামী বিমান কানাডা চলে যাবে। এ রকম হওয়ার কারণ পৃথিবীর আবর্তন গতি। আবর্তন গতি থাকলে বিমান দণি হতে উত্তর দিকে বা উত্তর হতে দণি দিকে কোনো দিনই তার নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছতে পারবে না।
৫. রকেটের মাধ্যমে পৃথিবী থেকে মানুষ চাঁদে যায়। রকেটের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৯ কি.মি.। পৃথিবীর পরিভ্রমণ গতি প্রতি সেকেন্ডে ৩০ কি.মি.। পৃথিবী থেকে মহাকাশের পথে যদি কোনো রকেট যাত্রা করে তাহলে প্রতি সেকেন্ডে (৩০+৯)=৩৯ কি.মি., প্রতি মিনিটে ২৩৪০ কি.মি., আর প্রতি ঘণ্টায় ১৪০৪০০ কি.মি. হিসাবে রকেটটি পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাবে। অর্থাৎ পৃথিবীতে রকেটটি ফিরে আসা কোনো দিনই সম্ভব হবে না। কিন্তু বাস্তবে এমনটি হচ্ছে না। এতে প্রমাণ করে পৃথিবী স্থির।
৬. রকেটটি যদি পৃথিবীর পরিভ্রমণ গতির সামনের দিক হতে যাত্রা করে তাহলে যাত্রা করার সাথে সাথে পৃথিবীর সাথে রকেটটি ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে যাবে। কারণ পৃথিবীর পরিভ্রমণ গতি প্রতি সেকেন্ডে ৩০ কি.মি. এবং রকেটের গতি প্রতি সেকেন্ডে ৯ কি.মি.।
সংবাদ সম্মেলনে পৃথিবী ঘূর্ণনের তথ্যে বিজ্ঞানীদের প্রচলিত ধারণায় ভুল রয়েছে চ্যালেঞ্জ করে সুশান্ত দেব তা সংশোধনের দাবি করে বলেন পৃথিবী সূর্যের চতুর্দিকে নয়, সূর্যই পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘুরছে।