ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হিন্দু এবং গাইবান্ধায় সাঁওতালদের উপর হামলার ঘটনা তুলে ধরে উগ্রতার বিস্তার ঠেকাতে এখনই সচেতন হওয়ার উপর জোর দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা।
তিনি বলেছেন, “দেশে একটা উগ্রতার ভাব দেখা যাচ্ছে। এটা কীভাবে অতিক্রম করা করা যায়, সেটা চিন্তা করতে হবে। আজকে যে অশান্তির বীজ বপন করছি, তা এখনই যদি দূর না করি, তাহলে এটা মাথাচড়া দিয়ে উঠবে, প্রকট আকার ধারণ করবে।”
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি বিজয়া পুনর্মিলনী পরিষদ আয়োজিত ‘বিজয়া সম্মিলন’ অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
তিনি বলেন, “সংবিধানে মৌলিক অনুচ্ছেদে সবার অধিকার সংরক্ষণ করা আছে। কিন্তু যারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে যারা অনুন্নত, কম শিক্ষিত, তাদেরও স্বার্থ সংরক্ষিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, যতই দিন যাচ্ছে আমারা আমাদের স্বাধীনতার চিন্তা-চেতনা থেকে সরে আসছি।
“আমি শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কথা বলব না। এটা তো (ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের ঘটনা) ধর্মের বিষয়। কিন্তু এ কয়েকটা সাঁওতাল পরিবার, এটা তো কোনো ধর্মের বিষয় ছিল না। কেন আজকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হল?”
‘এ উগ্রবাদ শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও উগ্রবাদ রয়েছে’ মন্তব্য করে সিনহা বলেন, “এমনটা কিন্তু শুধু বাংলাদেশে না, আজকে দেখি পাকিস্তানে, সেখানে কিন্তু ধর্মান্ধতা, উগ্রবাদ আমাদের থেকে বেশি।”
“আফগানিস্তানে যে সব এলাকা তালেবানদের দখলে আছে সেখানে তারা ঐহিত্য-সংস্কৃতি ধ্বংস করেছে। ইরাকে, সিরিয়াতে একই অবস্থা। ইসরাইলেও এ অবস্থা। এটা আমার মনে হয় প্রায় সারা পৃথিবীব্যাপী। এ উগ্রতা পৃথিবীর এক প্রান্তে হলে এটা ক্রমে অন্য অঞ্চলে সংক্রমিত হয়। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে এটা প্রতিহত করার জন্য।”
আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা আশা করব, আপনারা (আইনজীবীরা) এগিয়ে আসবেন। যারা সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করছে তাদের প্রতিহত করবেন।”
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অফারও বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল বাসেত মজুমদার, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন।