নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি হচ্ছে না। এই ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে সহযোগিতা করতে ‘প্রস্তুত নয়’ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার।
পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে।
পত্রিকাটির ভাষ্য মতে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের কথিত সংঘাতে আটকে যাচ্ছে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি।
রাজ্য সরকারের এক মন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এখন কিছুই হচ্ছে না। এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিষয়টি দেখছেন।’
ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এতে বলা হয়, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে কেন্দ্র এবং রাজ্যের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের শিকার হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ভালো। কিন্তু রাজ্যের মানুষের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের দাবি, ক্ষোভের কারণ রয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ সফরের সময় মোদি রাজ্যের পানিসমস্যা মেটানোর জন্য যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কোনোটাই রাখেননি। ওই সফরের পরে বছর ঘুরে গেলেও সিকিম ও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে এক সঙ্গে বসিয়ে তিস্তা নিয়ে কোনো কথা বলেননি মোদি।
আগামী ১৭-১৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে যাচ্ছেন। এই সফরের অন্যতম লক্ষ্য তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছানো যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শর্ত আকারে এটা তুলে ধরা হচ্ছে না।
মরোক্কয় কপ সম্মেলন এবং বুদাপেস্ট পানি সম্মেলনে যোগদান শেষে দেশে ফিরে গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘শর্ত দিয়ে সফর হচ্ছে না। তবে তিস্তা নিয়ে আলোচনা চলছে, আমরা আশাবাদী। আমাদের মতো আমরা কাজ করছি।’
কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, শেখ হাসিনার আসন্ন সফরে আরও স্পষ্টভাবে ভারতের কাছে তিস্তা চুক্তির অগ্রগতি চাইবে ঢাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে চলাটাই সাউথ ব্লকের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। মোদির দলের যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, তাই তিস্তা চুক্তির আগে পশ্চিমবঙ্গের সম্মতি নেয়াটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে না। তবে মোদি সরকার এমন কিছু করবেন কিনা সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।
এর আগে শেখ হাসিনার ভারত সফর এবং নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময়ও তিস্তা চুক্তির বিষয়টি ওঠে। তখনও কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিরোধের ধুয়া তুলে বিষয়টি এড়িয়ে যায় ভারত। এবারও মোদি-মমতার কথিত দ্বন্দ্ব সামনে এনে তারা একই কৌশল নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।