চট্টগ্রামে ডিজিটাল কার পার্কিংস্পট হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক : বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এই প্রথম ডিজিটাল কার পার্কিং তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ব্যস্ততম নগরী হওয়ার পরও এখানে কোনো মাল্টিলেভেল ডিজিটাল কার পার্কিং স্পট নেই। তবে আগামী বছরের প্রথমার্ধেই এই ডিজিটাল কার পার্কিং স্পট চালু হতে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বদলে যেতে শুরু করা চট্টগ্রামের জন্য এটি হবে আরেকটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ। দেশের সর্বপ্রথম স্কেলেটর (স্বয়ংক্রিয় সিঁড়ি) যুক্ত হয়েছিল ৬০র দশকে নির্মিত চট্টগ্রামে বিপণী বিতানে (নিউমার্কেট)। আর এখন সেই ঐতিহ্যবাহী মার্কেটের পার্কিং স্পেসে যুক্ত হতে যাচ্ছে নগরীর প্রথম মাল্টিলেভেল ডিজিটাল কার পার্কিং।
এই পদ্ধতিতে কার্ড পাঞ্চ করলেই সাত তলার উপর থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গাড়িটি নিচে নেমে আসবে। এগিয়ে যাওয়া চট্টগ্রামে আগামী এপ্রিল-মে মাসে চালু হতে পারে এই ডিজিটাল কার পার্কিংস্পট।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে বিপণী বিতানের ৭ টি গাড়ি পার্ক করার জায়গায় স্থাপন করতে যাচ্ছে এই মাল্টিলেভেল কার পার্কিং। ইতিমধ্যে পত্রিকায় দরপত্রও প্রকাশিত হয়েছে এবং আগামী ২২ নভেম্বর দরপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ।
সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ‘আমি চট্টগ্রামবাসীর কাছে আধুনিক ও নতুন বিষয়টি পরিচিতি করতে চাচ্ছি। চট্টগ্রাম বদলে যাচ্ছে, এই বদলে যাওয়ার পথে কার পার্কিংয়ের জন্য আধুনিক বিষয়টিও যুক্ত করা হচ্ছে।’
কী পদ্ধতিতে মানুষ এখানে গাড়ি পার্ক করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষ ঘণ্টা হিসেবে টাকা দিয়ে এখানে গাড়ি পার্ক করতে পারবে।’
সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিপণী বিতানের ৭টি গাড়ি রাখার জায়গায় আপাতত এই মাল্টি লেভের কার পার্কিং স্থাপন করতে যাচ্ছি। সাত তলার স্টিলের কাঠামোর পার্কিং স্পেসটির প্রতি ফ্লোরে ৫ টি করে ৩৫ টি গাড়ি পার্ক করার জায়গা থাকার কথা। কিন্ত গাড়ি মুভ করার জন্য প্রতি ফ্লোরে চারটি করে ২৮টি এবং একটি ফ্লোরে একটি গাড়ি মিলিয়ে মোট ২৯টি গাড়ি পার্ক করা যাবে।’
মঈনুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পাঞ্চ মেশিনের সাহায্যে গাড়ি উপরের স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ধারিত ফ্লোরে চলে যাবে এবং একইভাবে নেমে আসবে। তবে মাল্টিলেভেল পার্কিং স্পেস নির্মাণ করা হলেও নিচে বিদ্যমান পার্কিং স্পেস থাকবে। বর্তমানে নিচে ৬০ থেকে ৬৫ টি গাড়ি পার্ক করার সুযোগ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ঢাকায় গণপূর্ত অধিদপ্তর সরকারিভাবে এ ধরনের একটি পার্কিং করেছে এবং বেসরকারিভাবে আরো কয়েকটি গড়ে উঠেছে। এদিকে বন্দরনগরীতে নতুন এ ধরনের পার্কিং স্পেস গড়ে তোলা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত উল্লেখ করে বিশিষ্ট ট্রান্সপোর্টেশন এক্সপার্ট প্রকৌশলী সুভাস বড়ুয়া বলেন, ‘কোন পয়েন্টে এ ধরনের পার্কিং স্পেস প্রয়োজন তা কি সার্ভে করা হয়েছে। নগরীতে দৈনিক এ ধরনের বেশি গাড়ি দেখা যায় আগ্রাবাদ এলাকায়। তাহলে এই মাল্টিলেভেল কার পার্কিং এ ধরনের এলাকায় হলে ভাল হতো। অন্যথায় টাকা খরচ করে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং তৈরি করলেও তা অকার্যকর থাকবে।’
এ বিষয়ে সিডিএ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে নগরীর এই স্থানে তা স্থাপন করা হচ্ছে। যেহেতু তা স্টিলের কাঠামোর তৈরি, পরবর্তীতে তা যেকোনো স্থানে স্থাপন করা যাবে। এছাড়া একটি সফল হলে নগরীর বিভিন্ন স্থানেও এ ধরনের পার্কিং স্থাপন করা হবে।