আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হাইতির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সির দেওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, হারিকেন ম্যাথিউয়ের আঘাতে হাইতিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০০-ও ওপরে। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যম সংখ্যাটিকে ৮৪২ বলে প্রকাশ করেছে। এ সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে তো বটেই, সেইসঙ্গে আশঙ্কার দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, হারিকেন পরবর্তী সময়ে দুর্যোগপ্রবণ দেশটিতে খাদ্য ও পরিবেশগত বিপর্যয় বড় আকার ধারণ করতে পারে। দেখা দিতে পারে ভয়াবহ মানবিক সংকট। হাইতির দুযোর্গবিধ্বস্ত এলাকার কর্তাব্যক্তিরা ইতোমধ্যে বিশ্ব গণমাধ্যমে তাদের এ আশঙ্কার কথা বর্ণনা করেছেন। তাদের আশঙ্কা, রাস্তাঘাট, সেতু ও আনুষঙ্গিক বিভিন্ন অবকাঠামো ভেঙে পড়ায় আর্তদের কাছে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছনোই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণস্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন পার্টনার্স ইন হেলথের পক্ষ থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, হাইতিতে কলেরা সংক্রমণ এ ধাক্কায় বহুগুণে প্রকট হয়ে উঠতে পারে। সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০১২ সালের হারিকেন স্যান্ডির পর হাইতিতে কলেরার যে প্রকোপ দেখা দিয়েছিল তা আজ অব্দি বজায় আছে। এক্ষেত্রে নতুন করে ম্যাথিউর আক্রমণে রোগের সংক্রমণ আরও বেড়ে যেতে পারে।
হাইতিতে সহায়তা পাঠানো বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার করে জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স-এর কমান্ডার ও দেশটির নৌবাহিনীর রিয়ার অ্যাডমিরাল সেড্রিক প্রিঙ্গল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, শনিবার নাগাদ ৩৫০ সেনাসদস্য আর্তের সেবায় হাইতিতে অবতরণ করবে। হাইতির দুর্গতদের সহায়তায় নেদারল্যান্ড ও ফ্রান্স ত্রাণবাহী নৌবহর পাঠাবে। পাঠাতে পারে যুক্তরাজ্যও। শুক্রবার হাইতির রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
হাইতির সিভিল প্রটেকশন অথরিটি-র দেওয়া তথ্য মতে, এ মুহূর্তে দেশটির প্রায় সাড়ে ৩ লাখ আর্ত মানুষের সার্বিক সহায়তা প্রয়োজন, যাদের মাত্র ছয় ভাগের এক ভাগ মানুষকে প্রায় ২০০ আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গা করে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাইতির ওপর দিয়ে বয়ে যায় ক্যাটাগরি চারের আওতাভুক্ত (ঝড়ো বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২০৯-২৫১ কিলোমিটার) হারিকেন ম্যাথিউ। ঝড়টি পরে দিগপরিবর্তন করে ক্যাটাগরি তিনের আওতাভুক্ত হয়ে (ঘণ্টায় ১৭৮-২০৮ কিলোমিটার) শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হানে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাইতিতে নিহতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৮০০ এবং ফ্লোরিডায় ৩ জন।