নিউজ ডেস্ক : মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো ব্যবসায়ী পেয়ার আহমেদ আকাশ এ মুহূর্তে ফেনী কারাগারে আটক বলে জানা গেছে৷ তবে এই ব্যবসায়ী গুলশান হামলার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত ছিল কিনা, তা এখনও জানাতে পারেনি পুলিশ৷
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম অবশ্য বলছে যে, ‘গুলশান হামলার সন্দেহভাজন আন্দালিব আহমেদের সঙ্গে আটক এই ব্যবসায়ীর যোগাযোগ ছিল৷’
বৃহস্পতিবারই মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটকের খবর জানা যায়৷ তাদের ২রা আগস্ট থেকে ১৭ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে আটক করা হয়েছিল৷ এদের মধ্যে বাংলাদেশের একজন ব্যবসায়ী আছে৷ আটকের পর তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম৷
মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৭ বছর বয়সি ঐ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী গুলশান হামলার সন্দেহভাজন আন্দালিব আহমেদের সঙ্গে দেখা করেছিল৷ আন্দালিব মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল৷ ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় থাকার পর আন্দালিব ইস্তানবুলে পাড়ি জমায়৷
খবরে আরো বলা হয়, আটক বাংলাদেশি কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাংয়ে একটি রেস্তোরাঁ চালাতো৷ একটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনকে সে একে-৪৭ রাইফেল পাচার করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ এমনকি তার নামে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিস’-ও জারি করা হয়েছিল৷
বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়া পুলিশের আইজি খালিদ আবু বকর জানান, ‘‘১৯শে আগস্ট আটক বাংলাদেশি নাগরিক একজন রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী৷ তাকে ইতিমধ্যেই নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ এই বাংলাদেশি ছাড়া অপর দু’জন বিদেশি নাগরিকের একজন নেপালি এবং অন্যজন মরক্কোর নাগরিক৷ নেপালি নাগরিক মালয়েশিয়ায় বিনোদন সংক্রান্ত ব্যবসা পরিচালনা করতো৷ তাকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্যদের জন্য ভ্রমণ সংক্রান্ত ভুয়া কাগজপত্র তৈরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়৷” সব মিলিয়ে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে চারজনকে আটক করা হয়৷ এদের মধ্যে একজন মালয়েশিয়ার নাগরিক৷
শুক্রবার সকালে এ নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি-র উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জঙ্গি সন্দেহে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি এক ব্যবসয়ী আটকের ঘটনা আমরা সংবাদমাধ্যম মারফত জেনেছি৷ তবে তাকে আটক এবং বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই৷”
তিনি আরো জানান, ‘‘গুলশান হামলার ব্যাপারে আমরা এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে আটক করেছি৷ প্রকাশ করেছি সন্দেহভাজনদের নামও৷ এ মুহূর্তে আরো তদন্ত চলছে৷ তবে আন্দালিব আহমেদ নামে কোনো সন্দেহভাজেনের নাম এখনো পাইনি আমরা৷”
তাঁর কথায়, ‘‘গুলশানের জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্ত করছে কাউন্টার টেরররিজম ইউনিট৷ তারা তদন্তে এ পর্যন্ত যা পেয়েছে, তাতে আন্দালিব আহমেদ নামে কেউ নেই৷”
তবে দিনের শেষে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো ঐ ব্যবসায়ীর নাম জানাতে পেরেছে পুলিশ৷ তার নাম পেয়ার আহমেদ আকাশ৷ জানা গেছে, গত ২রা অক্টোবর তাকে ফেরত পাঠানোর পর ফেনী পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়৷ এ মুহূর্তে সে ফেনী কারাগারে আছে৷ আকাশ চট্টগ্রামের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র সংক্রান্ত একটি মামলারও আসামি ছিল৷ তবে ঐ মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়৷ ফেনীর দাগনভূঞা থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷ খবর ডয়চে ভেলের