আমিরজাদা চৌধুরী : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জামানতের চেক জালিয়াতি করে সড়ক ও জনপথের (সওজ) প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা নিজ ব্যাঙ্ক একাউন্টে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন এক ঠিকাদার। তবে ব্যাঙ্ক সংশ্লিষ্টদের তৎপরতার কারণে ওই টাকা ঠিকাদার তুলে নিয়ে যেতে পারেন নি। এ ঘটনায় প্রতারক ঠিকাদার ও সওজের এক কর্মচারির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঘটনাটি চাঞ্চলের সৃষ্টি করেছে।
মামলার আসামীরা হলেন, ঠিকাদার মো. শরীফ আলম এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কম্পিউটার অপারেটর আবুল আউয়াল সরকার। মামলা দায়েরর পর থেকে কম্পিউটার অপারেটর আবুল আউয়াল সরকার পলাতক রয়েছেন। গত মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় মামলাটি করেছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু এহতেশাম রাশেদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক বিভাগ ও থানা সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা জেলার সদর উপজেলার বজ্রপুরের ঠিকানাধারী মো. শরীফ আলমের মালিকানাধীন তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যথা মেসার্স আবদুল্লাহ আল মামুন এর নামে সড়ক বিভাগের হিসাব নং ৫০০২, চেক নং-ম-৮৬৯১৩৬ (তারিখঃ- ১৮/০৯/২০১৬ইং) এর মাধ্যমে ৯ হাজার ৪শত টাকার স্থলে ২ কোটি ৯ হাজার ৪শ টাকা, মেসার্স এন.ইসলাম এন্ড কোং এর নামে একই হিসাবে চেক নং-ম-৮৬৯১৩৭ এর মাধ্যমে ১১ হাজার ৪৬০ টাকার স্থলে ৩ কোটি ১১ হাজার ৪৬০ টাকা এবং একই হিসাবে মেসার্স হেলাল এন্টারপ্রাইজের নামে চেক নং-ম- ৮৬৯১৩৮ এবং চেকের অ্যাডভাইসে ৫ হাজার ৯৩০ এর স্থলে ৫০ লাখ ৫৯৩০ টাকা লিখে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখায় জমা দেন গত ১৯ সেপ্টেম্বর। চেক গুলো পেয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই দিনই ক্লিয়ারিংয়ের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে ৫ কোটি ৫০ লাখ ২৬ হাজার ৭৯০টাকা সংগ্রহ করে ওই ঠিকাদারের একাউন্টে জমা করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার ব্যাবস্থাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, টাকার অংক বেশি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে সড়ক বিভাগকে চিঠি দেন। তখন সওজ যাছাই-বাছাই করে দেখতে পায় ওই তিনটি চেকের বিপরীতে মাত্র ২৬ হাজার ৭৯০ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী আবু এহতেশাম রাশেদ জানান, এ ঘটনায় দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এছাড়া সওজ কর্মচারির বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতেও ইতিমধ্যেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব কম সময়ের মধ্যেই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে।
তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শরীফ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি। আব্দুল আউয়ালের দু’টি মোবাইল ফোন নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।