আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের সঙ্গে জোট বেঁধে ইয়েমেনে সন্ত্রাসবিরোধী হামলা চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সৌদি সামরিক জোটের এই হামলায় দেশটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।
এমন প্রেক্ষাপটে সৌদি সামরিক জোট থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর রয়টার্সের।
বাহরাইনে অবস্থিত মার্কিন নৌঘাঁটির মুখপাত্র লে. ইয়ান মেক কনাঘে জানিয়েছেন, সমর পরিকল্পনার দায়িত্বে হাতে গোনা যে কয়েকজন মার্কিন সেনা অবশিষ্ট আছেন, তাদেরও সরিয়ে নেয়া হবে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কোনো চাপের মুখে সৌদি সামরিক জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
পেন্টগনের দাবি, ইয়েমেনে গত ১৬ মাস ধরে চলা গৃহযুদ্ধে সাড়ে ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে, যাদের বেশিরভাগ বেসামরিক। তাছাড়া সৌদি জোটের হামলায় দেশটির ১৪ বিলিয়ন ডলারের অবকাঠামোগত ও অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। ফলে দেশটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। তাই এ সামরিক জোট থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে।
আগে রিয়াদসহ বিভিন্নস্থানে সৌদি সমরিক জোটের পরিকল্পনার দায়িত্বে ৪৫ জন মার্কিন সেনা নিয়োজিত ছিল। এখন তা কমিয়ে ৪/৫ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে। গত জুন থেকে এ মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরু করে পেন্টাগন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র এডাম স্টাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, যুদ্ধের সময় মিত্রদেশ সৌদি আরবের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এসব সেনা পাঠানো হয়েছিল। যুদ্ধ থেমে যাওয়ায় এখন তাদের প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা সৌদি আরবের স্বার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করি। ইয়েমেনের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বিগ্ন। তাই সৌদি জোটকে ইয়েমেনে নির্বিচারে হামলা বন্ধের চাপ দেয়া হয়েছে।
ইয়েমেনে সৌদি জোটের সাম্প্রতিক হামলায় নারী ও শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ায় এবং হাসপাতালগুলোতে হামলা করায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় ওঠে। মূলত এ কারণেই সৌদি জোট থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোট বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ আল আসেরি তাদের বাহিনীতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার কিছু জানাননি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে তেমন আমলে নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।
আহমেদ আল আসেরি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক কৌশলগত। যদি সত্যি হয় তাহলে এই পদক্ষেপ হবে সামরিক কৌশলগত। যুক্তরাষ্ট্র তাদের সম্পদ সরিয়ে নিতে পারে, তবে এটি দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।’