শিশুকে বুকের দুধ না খাওয়ালে মায়েদের বিষণ্নতা
---
জন্মের পর নবজাতককে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানো শুধু যে শিশুর জন্যে জরুরি তা নয়। মায়ের স্বাস্থ্যেও এর ভূমিকা রয়েছে। এক ব্রিটিশ গবেষণায় বলা হয়, স্তনে ব্যথা বা ঝামেলার কারণে যে সকল মা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াতে চান না তাদের মধ্যে মারাত্মক বিষণ্নতা ভর করে। বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশু জন্মের পর তাকে টানা ছয় মাস কেবল বুকের দুধ খাওয়াতে হয়। এতে নবজাতক কান ও শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ, হঠাৎ মৃত্যুর ঝুঁকি, অ্যালার্জি, শিশুকালের স্থূলতা এবং ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের আশঙ্কা থেকে দূরে থাকে।
নিয়মিত দুধ খাওয়ানো মায়ের জন্যেও দারুণ উপকারী। এতে মায়ের দীর্ঘমেয়াদি বিষণ্নতা, হাড়ের ক্ষয় এবং কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে যায়। ওয়েলসের সোয়ানসি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অ্যাম ব্রাউন জানান, শিশুকে সঠিকভাবে বুকের দুধ না দিতে পারার কারণে মায়ের ওপর কিছুটা বিষণ্নতা ভর করতে পারে। আধুনিক মায়েরা সাধারণত স্তন্যদান করতে চান না নানা কারণে। এ কাজের ঝামেলা বা সময়ের অভাব বা জীবনযাপন কারণ হতে পারে। কিন্তু এই জরুরি কাজটি বাদ দিলে শিশুর সঙ্গে তিনি নিজেও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে যান।
তাই যত ঝামেলাই হোক না কেন, কাজটি চালিয়ে যেতে তাগাদা দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। এর কোনো বিকল্প নেই। কাজেই চর্চা চালিয়ে গেলেই কাজটি সহজ হয়ে আসবে। ভুল হলেও তা এমনিতেই শুধরে নেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে বাড়ির অভিজ্ঞরাও সাহায্য করতে পারেন।
এ নিয়ে ২১৭ জন নারীর ওপর গবেষণা চালান গবেষকরা। দেখা গেছে, যে নারী যত দ্রুত বুকের দুধ বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি তত বেশি স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়েছেন। স্পেনের ইউনিভার্সিটি অব সেভাইলের গবেষক ক্রিস্টিনা বোরা জানান, এ বিষয়ে মায়েরা যত বেশি জানবেন তত বেশি সচেতন হবেন। ফলে প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তাদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হবে।
বোরা আরো জানান, গর্ভবতী অবস্থায় যে মায়েদের মধ্যে বিষণ্নতা ছিল, শিশু জন্মের পর বুকের দুধ খাওয়ানোর কারণে সেই বিষণ্নতা থেকেও মুক্তি মিলেছে তাদের।