g ২ ট্রিলিয়ন ডলারের পথে ভারতের অর্থনীতি | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

শনিবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ইং ১৫ই আশ্বিন, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

২ ট্রিলিয়ন ডলারের পথে ভারতের অর্থনীতি

AmaderBrahmanbaria.COM
অক্টোবর ১০, ২০১৪

---

চলতি বছর বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার কমপক্ষে ৫ শতাংশ থাকলে এবং রুপির মূল্য নিম্নমুখী না হলে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের শেষে ভারত ২ ট্রিলিয়ন (২ লাখ কোটি) ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। খবর লাইভমিন্ট।

Indian-Economy-300x200সংখ্যাটি ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তি বা পিপিপির সমন্বয় ছাড়াই হিসাব করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৪ দশমিক ৭ শতাংশের পর চলতি অর্থবছরে ভারতের অর্থনীতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশ গতিতে সম্প্রসারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১২-১৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪ দশমিক ৫ শতাংশ যা এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম। তাই ধারণা করা হচ্ছে, ওই অর্থবছরে গতি না হারালে ভারত এরই মধ্যে ২ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করত।

তবে ২ ট্রিলিয়ন ডলার একটি সংখ্যা মাত্র। এ মাইলফলকেও ভারত মধ্যম আয়ের একটি দেশ হিসেবেই থেকে যাবে। উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে হলে অর্থনীতিকে বর্তমান গতির চার গুণ বেগে সম্প্রসারিত হতে হবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, জনসংখ্যা অপরিবর্তিত রাখতে হবে।

এ শতকের শুরুতে ভারতের জিডিপির আকার ছিল ৪৮১ বিলিয়ন ডলার এবং ২০০৭ সালে এসে দাঁড়ায় ১ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলারে। তার মানে সাত বছরে অর্থনীতির আকার বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। আর ১৪ বছর ধরলে ভারতের অর্থনীতি সম্প্রসারিত হয়েছে চার গুণেরও বেশি। এর পরও অর্থনীতির অবকাঠামো খাতে এখনো ভারসাম্যহীনতারই রাজত্ব বহমান। এ সময়ে অর্থনীতিতে সেবা খাতের অবদান বাড়লেও ম্যানুফ্যাকচারিং প্রবৃদ্ধি কয়েক বছর ধরে আটকে আছে সেই ১৫ শতাংশে।

অর্থনীতি এগোলেও সেভাবে এগোতে পারেনি দেশটির কর্মবাজার। ভারতের পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯৯-২০০০ থেকে ২০০৯-২০১০ অর্থবছর পর্যন্ত তথাকথিত আনুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান কমে যায় ২০ লাখ এবং অন্যান্য অনানুষ্ঠানিক খাতে চাকরি সৃষ্টি হয় ৪৬ লাখেরও বেশি। বর্তমানে প্রতি বছর গড়ে ১ কোটি ২০ লাখের মতো ব্যক্তি কর্মবাজারে প্রবেশ করছে। সবচেয়ে বেশি ৫০ শতাংশ কর্মীবাহিনী নিয়োজিত আছে দেশটির কৃষি খাতে, যা সার্বিক জিডিপিতে অবদান রাখছে ১৮ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দারিদ্র্যসীমায়। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, ২০০৫ সালে দৈনিক ১ দশমিক ২৫ ডলার উপার্জনকারী দরিদ্র জনগোষ্ঠীর হার ছিল ৪১ দশমিক ৬ শতাংশ, ২০১০ সালে এ হার নেমে এসেছে ৩২ দশমিক ৭ শতাংশে। এছাড়া সরকারি জরিপে দেখা যায়, ২০১১ সালে প্রতি তিনটি পরিবারের দুটি ব্যাংকিং সেবা পায়, এক দশক আগেও মাত্র একটি পরিবার এ সেবা পেত।

একই সময়ে নগরায়ণ কার্যক্রমের সম্প্রসারণে বাড়তি গতি পেয়েছে সার্বিক প্রবৃদ্ধি। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান সেটেলমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫১ সালের পর থেকে দুই হাজারের কম জনগোষ্ঠীর গ্রামীণ অঞ্চলের সংখ্যা ৬৩ থেকে কমে ২৮ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে একই সময়ে পাঁচ হাজারের বেশি জনগোষ্ঠীর বড় গ্রামীণ অঞ্চলের হার ৫ থেকে বেড়ে ১৭ শতাংশে পৌঁছেছে। এছাড়া ২০০১ সালে সাক্ষরতার হার ৬৫ দশমিক ৩৮ থেকে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে ২০১১ সালে ৭৪ দশমিক ০৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

তার পরও অর্থনীতির প্রতিটি খাতে চ্যালেঞ্জ রয়েই গেছে। টয়লেটের চেয়ে সেলফোনের সংখ্যা বেশি হওয়া এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে লিঙ্গবৈষম্য প্রতিনিয়ত অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনার জন্ম দিচ্ছে। ২০০৭ সালে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ডলার অতিক্রমের মাধ্যমে দেশটি নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়। তার পরও অনেক ক্ষেত্রে ভারত এখনো তৃতীয় বিশ্বের সমকাতারে পড়ে রয়েছে।

তাই তো ক্রিসিল লিমিটেডের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডি কে জোশি বলেন, ‘২ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলেও ভারতের প্রেক্ষাপটে তা একটি সংখ্যা মাত্র।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখনো অনেক ভারতীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। দুই দশক আগে অর্থনীতির আকারে ভারত ও চীন একই পর্যায়ে থাকলে আজ চীন আমাদের চেয়ে এক দশক এগিয়ে আছে। যুব শ্রেণীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে ভারতকে আরো দ্রুত গতিতে এগিয়ে যেতে হবে।’

এ জাতীয় আরও খবর