৪৬ হাজার বিও একাউন্ট বন্ধ
---

নবায়নের শেষ সময় ছিল ৩০ জুন। ব্রোকারেজ হাউসগুলো বিনিয়োগকারীদের ২৫ জুন পর্যন্ত সময় দেয়। এরপরই হাউসগুলো থেকে বিও একাউন্ট বন্ধ করে দেয়া শুরু হয়। আর সর্বশেষ হিসাবে দেশের শেয়ারবাজারে বিও একাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯ লাখ ৪১ হাজার। সিডিবিএল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।সূত্র জানায়, বর্তমানে বিও একাউন্ট নবায়ন করতে ৫০০ টাকা লাগে। এর মধ্যে সিডিবিএল ১৫০ টাকা, হিসাব পরিচালনাকারী ব্রোকারেজ হাউস ১০০ টাকা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ৫০ টাকা এবং বিএসইসির মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ২০০ টাকা জমা হয়।
প্রতি বছর ৩০ জুনের মধ্যে এই টাকা সিডিবিএলে জমা দিতে হয়। ব্রোকারেজ হাউসগুলো বিনিয়োগকারীদের ২৫ জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছিল। এরপরই নবায়ন ফি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় একাউন্ট বন্ধ করা শুরু হয়। আর ২৫ জুন শেয়ারবাজারে মোট বিও একাউন্ট ছিল ২৯ লাখ ৮৭ হাজার। সর্বশেষ হিসাবে গত বৃহস্পতিবার তা কমে দাঁড়ায় ২৯ লাখ ৪১ হাজার।
এ হিসাবে ৪৬ হাজার বিও একাউন্ট বন্ধ হয়েছে। তবে সিডিবিএল সূত্র বলছে, এই সংখ্যা আরও বাড়বে। কারণ ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দেয়া হলেও তারা আরও ৭ দিন নবায়ন ফি জমা নেবে। ফলে ৭ জুলাইয়ের পর এ সংখ্যা আরও বাড়বে। এছাড়া বেশ কিছু হাউস একাউন্ট খোলার জন্য সিকিউরিটি ডিপোজিট বা জামানত জমা দিয়েছে। ওইসব একাউন্ট বন্ধ করা হয়নি।সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩-এর তফসিল-৪ অনুযায়ী, বিও হিসাব পরিচালনার জন্য ডিপোজিটরি অংশগ্রহণকারী বা বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত হারে বার্ষিক হিসাবরক্ষণ ফি প্রদান করে হিসাব নবায়ন করতে হয়।এর আগে পঞ্জিকা বর্ষ হিসাবে প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে এই ফি অগ্রিম গ্রহণ করা হতো।
২০১০ সালের জুন মাসে বিএসইসি বিও হিসাব নবায়নের সময় পরিবর্তন করে বার্ষিক ফি প্রদানের সময় জুন মাস নির্ধারণ করে দেয়। বিও নবায়ন ফি ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়। এরপর ২০১১ সালের ১৮ এপ্রিল বিএসইসির জারি করা সার্কুলারে ৩০ জুনের মধ্যে বিও একাউন্ট নবায়ন বাধ্যতামূলক করা হয়। সিডিবিএলের তথ্য অনুসারে, সারা দেশে সাড়ে ২৯ লাখ বিও একাউন্টের মধ্যে ঢাকায় ২২ লাখ এবং ঢাকার বাইরে সাড়ে ৭ লাখ। কিন্তু গত জানুয়ারি শেষে পাওয়া যায় ১১ লাখ বিও একাউন্ট। এগুলোতে শেয়ার আছে এবং নিয়মিত লেনদেন হয়। এছাড়া ৯ লাখ বিও একাউন্টে কখনও কখনও শেয়ার থাকলেও জানুয়ারিতে শূন্য হয়ে যায়। ১২ লাখ বিও অ্যাকাউন্টে কখনোই কোনো শেয়ার ছিল না। এসব বিও একাউন্ট সাধারণত আইপিওর জন্য ব্যবহার করা হয়।
অন্যদিকে ঢাকায় বিও একাউন্টের জন্য মেশিন রিডেবল হিসাব ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু প্রায় এক চতুর্থাংশ একাউন্টের মেশিন রিডেবল তথ্য নেই।সূত্র জানায়, পুঁজিবাজারে আইপিও আবেদনের জন্য নামে-বেনামে প্রচুর বিও একাউন্ট খোলা হয়। একই ব্যক্তি এক থেকে দেড়শ পর্যন্ত বিও একাউন্ট পরিচালনা করে। আর এসব বিওতে শুধু আইপিও আবেদন করা হয়। ২০০৯ সালের জুন পর্যন্ত বিও একাউন্টের সংখ্যা ছিল ১৪ লাখ।
কিন্তু ২০১০ সাল শেষে তা ৩৩ লাখ ছাড়িয়ে যায়। আর এই প্রবণতা রোধে বিও একাউন্ট খুলতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়। এছাড়াও বিও একাউন্টে ব্যাংক একাউন্ট সার্টিফিকেট দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।