নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায় সরকার: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায়। জনগণ যেন তাদের নেতৃত্ব খুঁজে নিতে পারে, সেটাই তাঁদের লক্ষ্য। কীভাবে সেই নেতৃত্ব খুঁজে নিতে পারে, তা–ই এখন মূল বিষয়।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে যুক্তফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে শুরু হওয়া সংলাপের সূচনা বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব না। এ ধারা অব্যাহত থাকুক এবং উন্নয়নের গতি সচল থাকুক। তিনি বলেন, ‘অনেক ঘাত–প্রতিঘাত ও বাধা অতিক্রম করে আমরা গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখছি। জনগণের কল্যাণে কাজ করছি। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক, এটাই আমরা চাই। গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকলে দেশের মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে, আমরা সেই সুযোগ সৃষ্টি করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী প্রথমে গণভবনে আসার জন্য যুক্তফ্রন্টের নেতাদের স্বাগত ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘গণভবন জনগণের ভবন। আপনারা এখানে এসেছেন, এ জন্য ধন্যবাদ।’
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপে বসেছে বিকল্পধারা বাংলাদেশের নেতৃত্বাধীন জোট যুক্তফ্রন্ট। ২১ সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গণভবনে সংলাপে বসেন বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান, প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, গোলাম সারোয়ার মিলন, আবদুর রউফ মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার মুহম্মদ ইউসুফ, সহসভাপতি মাহমুদা চৌধুরী, মাহবুব আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক ওমর ফারুক এবং নির্বাহী মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী প্রতিনিধিদলে আছেন।
এ ছাড়া সাবেক সাংসদ এইচ এম গোলাম রেজা, বিএলডিপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ ন্যাপের সভাপতি জেবেল রহমান গানি, মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান (এনডিপি) খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তুজা, মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ইশা, বাংলাদেশ জনতা পার্টির সভাপতি শেখ আসাদুজ্জামান, জনদলের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ইউনাইটেড মাইনরিটি ফ্রন্টের সভাপতি দিলীপ কুমার দাশ এবং লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী বিকল্পধারার সঙ্গে সংলাপে আছেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিকল্পধারা বাংলাদেশের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপে বসতে চেয়ে গত ৩০ অক্টোবর এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠান। পরে ওই দিন শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও দলটির নেতা অসীম কুমার উকিল রাত সাড়ে ১০টায় বি চৌধুরীর বারিধারার বাসভবন গিয়ে শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্র বি চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সাড়ে ৩ ঘণ্টার সংলাপ হয়। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সন্ধ্যা সাতটার দিকে সংলাপ শুরু হয়ে তা শেষ হয় রাত সাড়ে ১০টায়।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গতকাল বৃহস্পতিবার চিঠি দেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সরকারি দল আওয়ামী লীগের ডাকে সাড়া দিয়ে সংলাপে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেয় বাম গণতান্ত্রিক জোট। চিঠির সঙ্গে ১৬ জনের প্রতিনিধিদলের তালিকাও পাঠায় দলটি। এদিকে ৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক দল আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জাতীয় পার্টি (জেপি) ও ৫ নভেম্বর এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টি (জাপা) সংলাপে অংশ নেবে ।
এদিকে সংলাপের আমন্ত্রণ পেতে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর দল ইসলামী ঐক্যজোট। দলের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে এই চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়। চিঠিতে সই করেন দলের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ নেজামী ও মহাসচিব মুফতি ফয়েজুল্লাহ। এর মধ্যে আবদুল লতিফ নেজামী হেফাজতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আর ফয়েজুল্লাহ যুগ্ম মহাসচিব।