রোহিঙ্গাদের কাছে নির্যাতনের বর্ণনা শুনলেন প্রিয়াঙ্কা
কক্সবাজার প্রতিনিধি : দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজারে টেকনাফের হারিয়াখালী, উনচিপ্রাং এবং উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন করেছেন বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। এ সময় রোহিঙ্গাদের মুখে তাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনীর বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন তিনি।
শুধু রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শনই নয়, গত ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গারা নাফ নদের যে পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে, টেকনাফ সীমান্তের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের হারিয়াখালী বেড়িবাঁধের সেই দুর্গম এলাকাও ঘুরে দেখেছেন এই ভারতীয় অভিনেত্রী।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়ার রয়েল টিউলিপ হোটেল থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক দিয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ হারিয়াখালী এলাকায় পৌঁছান প্রিয়াঙ্কা। গাড়ি থেকে নেমে তিনি সীমান্তে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের স্থানগুলো ঘুরে দেখেন। শাহপরীর দ্বীপের হারিয়াখালী বেড়িবাঁধের ভাঙন স্থানে কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করেন। সেখানে দাঁড়িয়ে নাফ নদের ওপারের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যটি দেখেন।
আরও : ইফতারে সুস্বাদু বুন্দিয়া রায়তা
হারিয়াখালী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন শেষে প্রিয়াঙ্কা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে স্থানীয় শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন, হাসাহাসি করেন, খেলাধুলা করেন এবং ছবি তোলেন। এ সময় নিরাপত্তার কড়াকড়ি দেখে কিছুটা বিরক্ত হন তিনি। নিরাপত্তা কমানোর জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকে তিনি বলেন, ‘আমার জন্য এত বেশি নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই।’
এরপর সকাল ১০টার দিকে টেকনাফের নেটং পাহাড়ের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। সেখানে পৌঁছলে নাফ নদ দিয়ে মিয়ানমার থেকে কিভাবে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করছে, তা প্রিয়াঙ্কার সামনে তুলে ধরা হয়। এখানে ১৫ মিনিট অবস্থান করেন তিনি।
পরে লেদা বিজিবি চৌকির কাছে ইউনিসেফ পরিচালিত শিশুদের খেলাধুলার জন্য তৈরি স্থান পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে লেদা অস্থায়ী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি যাননি। পরে প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে ইউনিসেফের গাড়িবহর উখিয়ার বালুখালীতে স্থাপিত অস্থায়ী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের দিকে রওনা হয়। সেখানে অস্থায়ী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শন শেষে তিনি হোটেলে ফেরেন।
গত সোমবার চার দিনের সফরে কক্সবাজার আসেন হলিউড তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। তিনি অবস্থান করছেন ইনানী সৈকতের বিলাসবহুল হোটেল রয়েল টিউলিপে। আজ বুধবার কয়েকটি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শনসহ কিছু কর্মসূচিতে অংশ নেবেন তিনি। তবে তাঁর নিরাপত্তার স্বার্থে কর্মসূচিগুলো গোপন রাখা হয়েছে। তিনি যেখানে যাচ্ছেন, তার আশপাশে সংবাদমাধ্যমের কোনো কর্মীকেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ইউনিসেফের স্থানীয় কর্মকর্তারা বিষয়টি কাউকে জানতেও দিচ্ছেন না।