ফেনীতে ভ্রাম্যমান আদালতের উপর হামলা, ম্যাজিস্ট্রেট দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ
ফেনী শহরের গ্রান্ড হক টাওয়ারে মঙ্গলবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানার উপর হামলা ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেছে বিক্ষুদ্ব ব্যবসায়ীরা।
এসময় তারা দোকান-পাট বন্ধ করে ম্যাজিস্ট্রেট কে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। প্রায় দুই ঘন্টা পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট পিকেএম এনামুল করিম ও ফেনী মডেল থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী তাকে উদ্ধার করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শহরের গ্রান্ড হক টাওয়ারের ৩য় তলায় ‘মায়াবী’ শাড়ি বিতানে অভিযান চালায় ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানা। এসময় ওই দোকান থেকে চালান বিহীন ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার করে। বিপুল পরিমান ভারতীয় শাড়ি জব্দ ও দোকান মালিক সামছুল আলমকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
জরিমানা করায় দোকানের মালিক ম্যাজিষ্ট্রেট এর উপর তেড়ে আসে অব্যহত হুমকি ধমকি ও অশ্লীল গালমন্দ করায় তাকে আদালতের বিচারক সাত দিনের কারাদন্ড প্রদান করে। পরে তাদের আটক করে গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় ওই মার্কের্টের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীরা ম্যাজিষ্ট্রেট এর উপর হামলা চালায়।
আরও : ইফতারে সুস্বাদু বুন্দিয়া রায়তা
ম্যাজিষ্ট্রেট এর বহনকারী গাড়িতে তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে মার্কেটের গেইট বন্ধ করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। ওই মার্কের্টের ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীরা মিজান রোড়ে কাচের বোতল ভেঙ্গে লোহার সাইন বোর্ড ফেলে সড়ক অবরোধ করে। ঘটনার সময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে বহিরাগত যুবকরা এসে তাদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে।
বহিরাগতদের দস্তাদস্তিতে সময় টিভির চিত্র সাংবাদিক জুলহাস তালুকদার, ক্যামেরা পার্সন আরাফাত হোসেন রিয়াদ আহত হয়েছে। খবর পেয়ে ফেনী মডেল থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা চালান।
এপর্যায়ে ব্যবসায়ীরা কারাদন্ড প্রাপ্ত দোকানের ম্যানেজারকে ছিনিয়ে নিতে মিছিল করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ-র্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের সমঝোতার আশ্বাস দিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট পিকেএম এনামুল করিম নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সোহেল রানাকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গ্রান্ড হক টাওয়ারের ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালায়। এসময় ব্যবসায়ীদের সাথে বহিরাগত যুবকদের বিক্ষোভ মিছিল করে পরিস্থিতিকে আরো ঘোলাটে ও সহিংসতায় রুপ দেয়ার চেষ্টা করে।
কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন, মাদকের বিরুদ্ধে সোহেল রানার অব্যহত অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। তারা যেকোন মূল্যে সোহেল রানাকে ঘায়েল করতে পরিকল্পনার ছক আঁকছে। গ্রান্ড হক টাওয়ারের সিসি ক্যামেরা ও মিজান রোড়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে বেরিয়ে আসবে ঘটনায় জড়িত বহিরাগতরা।
ফেনী মডেল থানার ওসি রাশেদ খান চৌধুরী জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানকে কেন্দ্র করে গ্রান্ড হক টাওয়ারের ব্যবসায়ীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ম্যাজিষ্ট্রেটকে ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে কর্মস্থলে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।