কোটা বাতিল নয়, সংস্কার চায় সংসদীয় কমিটি
নিজস্ব প্রতিবেদক : সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের একটি ছবি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল নয়, যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন। এজন্য কমিটি কোটা পদ্ধতি ‘সহজীকরণের’ সুপারিশ করেছে।
সংসদ ভবনে রবিবার অনুষ্ঠিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২৮তম বৈঠকে এসব সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিফুর রহমান। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, এ. বি. এম ফজলে করিম চৌধুরী, র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, খোরশেদ আরা হক এবং জয়া সেন গুপ্তা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
কমিটি সূত্র জানায়, বিষয়টি বৈঠকের এজেন্ডায় না থাকলেও কমিটির সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন এবং কোটা পদ্ধতি সংস্কারের সুপারিশ করেন।
বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান ৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গত ১১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটাপদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দেন। তবে তিনি এটা বলেছেন যে, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আছেন তিনি বিষয়টি দেখবেন।
বৈঠক শেষে এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, কমিটি কোটাপদ্ধতি সহজীকরণের কথা বলেছে। সংবিধানে সমতাবিধানের (ইকুইটি) কথা বলা আছে। এসব বিষয় বিবেচনা নিয়ে যুক্তিযুক্তভাবে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করা প্রয়োজন, যাতে এটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। পাশাপাশি এটা নিয়ে যেন কোনো ষড়যন্ত্র বা দুরভিসন্ধি না হয়।
থানা স্বাস্থ্য সেবায় ৪৮২ কোটি টাকা বরাদ্ধের সুপারিশ
এদিকে আগামী বাজেটে দেশের ৪৮২টি থানার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য ৪৮২ কোটি টাকা বরাদ্ধের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। প্রতিটি থানা স্বাস্থ্য সেবা খাতে ১ কোটি টাকা করে বরাদ্দ প্রদানসহ উন্নতমানের অ্যাম্বুলেন্স সরবরাহ করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি সুপারিশ করা হয়। একইসঙ্গে আগামী অর্থ বছরে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ সরকারি করণসহ এমপিওভুক্ত প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।
সংসদ সচিবালয় জানায়, কমিটি পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন পত্র ফাঁস ও নকল বন্ধে পরীক্ষা পদ্ধতি ও পরীক্ষা কেন্দ্র কমানো সুপারিশ করে। একইসঙ্গে দেশের জেলা শহরে অনঅনুমোদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসককে একটি নীতিমালার আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের ডেলিভারি রুম শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে কমিটি।
বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশনের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।