হুমকি উপেক্ষা করে ঢাবিতে ফের বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক : আমার বোন পথে কেন, প্রশাসন জবাব চাই। জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে। ভয় দেখিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না। মামলা দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না। এভাবে স্লোগান দিতে দিতে কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে মধ্যরাতে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে মিছিলটি শাহবাগ মোড় ঘুরে ফের রাজু ভাস্কর্যের এসে শেষ হয়।
এছাড়া বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে রাজু ভাস্কর্যের বিপরীত পাশে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ অবস্থান নেয়। ঘোষণা অনুযায়ী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এলাকায় অবস্থান নিলেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হতে শুরু করলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সেখান থেকে সরে যান। পরে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিল বের করেন।
এদিকে চট্টগ্রামে ২নং গেট ও চট্টগ্রাম ষোলশহরে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ এবং ছাত্রলীগের বাধায় পড়ে। এসময় শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন, আন্দোলনকারী কোনো শিক্ষার্থীকে হয়রানি করা হলে ‘দাবানল’ আবার ছড়িয়ে পড়বে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন করায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল থেকে ছাত্রীদের বের করে দেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেয় ছাত্র অধিকার পরিষদ। বিকেল ৪টার দিকে সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে এ কর্মসূচি পালন করেন।
বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে কয়েকজন ছাত্রীকে মধ্যরাতে বের করে দেয় কর্তৃপক্ষ। হল থেকে বের করে দেয়া ছাত্রীদের মধ্যে রিমি, অন্তি ও শারমিন নামে তিনজন শিক্ষার্থী রয়েছেন। পরে স্বজনরা হলের গেট থেকে তাদের নিয়ে যান। গভীর রাতে ছাত্রী বের করে দেয়ায় সমালোচনার মুখে পড়ে প্রশাসন।
পরে শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ফেসবুকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে তিন ছাত্রীকে অভিভাবক ডেকে এনে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এখানে বিভ্রান্তি ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সাধারণ কোনো ছাত্রীকে হয়রানি করা হয়নি।
জবাবে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে নানান মন্তব্যে উপাচার্যকে নিয়ে তারা বলেন, ‘মাননীয় উপাচার্য স্যারের মন্তব্যে আমরা হতবাক। মধ্যরাতে বের করে দেয়া হয়নি অভিভাবকের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে। একটি রাত রাখতে পারলো না, মধ্যরাতেই তুলে দিতে হবে। স্যার, আপনি কি তাহলে সে সকল মেয়েদের অভিভাবক নন? জেগেছে সারাবাংলার ছাত্র সমাজ। সুফিয়া কামাল হলের বোনদের হলে না ফিরিয়ে কেউ আজ যাবে না।’
এছাড়া তারা অভিযোগ করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় হলের ১০ থেকে ১৫ জন ছাত্রীর মোবাইল জব্দসহ তাদের রুমে ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।