আমার জীবনের সেরা গোল এটাই : রোনালদো
স্পোর্টস ডেস্ক : মায়াবী রাতের পরে একটা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ফুটবল বিশ্বে- ‘রোনালদো, তুমি কোন গ্রহ থেকে এসেছো?’ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে রোনালদোর অবিশ্বাস্য গোল দেখে উত্তাল প্রাক্তন থেকে বর্তমান ফুটবল তারকারা।
তুরিনে রোনালদোর বাইসাইকেল কিক জালে জড়িয়ে যেতেই উঠে দাঁড়িয়েছিল পুরো স্টেডিয়াম। এগিয়ে এসে অভিনন্দন জানিয়ে যান জুভেন্টাসের গোলকিপার জিয়ানলুইজি বুফনও। যে গোল দেখার পরে রিয়াল মাদ্রিদ ম্যানেজার জিনেদিন জিদানেরও ‘একটু হিংসে’ হচ্ছে। আর রোনালদোর প্রাক্তন সতীর্থ আলভারো আর্বেলোয়ার টুইট, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো এখন পৃথিবী ছেড়ে মঙ্গলগ্রহবাসীদের সাথে ফুটবল খেলতে পারে।
তিনি নিজে কী বলছেন? চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম পর্বে জুভেন্টাসকে বিধ্বস্ত করার পরে রোনালদো বলছেন, ‘জানি আমার দ্বিতীয় গোলটা (বাইসাইকেল কিক) নিয়ে সর্বত্র আলোচনা হচ্ছে। সত্যি বিস্ময়কর গোল। সম্ভবত আমার জীবনের সেরা।’
যে গোল নিয়ে রোনালদো আরও বলেন, এই রকম একটা গোল করার ইচ্ছে অনেক দিন থেকেই ছিল। তবে সব কিছুই পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। বলটা আসছে দেখে মনে হল, একবার চেষ্টা করলে দোষ কী? এ রকম গোল করার জন্য চেষ্টা করে যেতেই হবে। আমার ক্ষেত্রে সব কিছু ঠিকঠাকই হয়ে গেল।
রোনালদোর ওই গোলের পরে মাঠ ভর্তি জুভেন্টাসের সমর্থক উঠে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানান নায়ককে। রোনালদোকে দেখা যায় দুই হাত জোড়া করে অভিনন্দন গ্রহণ করছেন। কী মনে হচ্ছিল তখন? ‘অদ্ভুত একটা অনুভূতি হচ্ছিল। এই মাঠে কত মহান ফুটবলার খেলে গিয়েছেন। সে রকম একটা মাঠে দাঁড়িয়ে এই ভাবে দর্শকদের ভালোবাসা পাওয়ার কোনও তুলনা হয় না। যখন ছোট ছিলাম, তখন থেকেই জুভেন্টাসকে আমার খুব ভালো লাগত। সেই ক্লাবের সমর্থকরা আমার গোলের পরে উঠে দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছে, এই দৃশ্য কোনও দিন ভুলব না।
মঙ্গলবার রাতে প্রথম গোলটা করার সাথে সাথেই অবশ্য একটা রেকর্ড করে ফেলেন রোনালদো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা ১০টি ম্যাচে গোল করার রেকর্ড। যা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সি আর সেভেন বলেন, আমি জানতাম না এই রেকর্ডটা করেছি। আপনার থেকে শুনলাম। রেকর্ড করতে আমার সব সময়ই ভালো লাগে।
প্রথম পর্বে ৩-০ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ওঠার দিকে রিয়াল যে এক ধাপ এগিয়ে গেছে, তা নিয়ে সন্দেহের জায়গা নেই।
রোনালদো বলছেন, এটা আমাদের প্রতিযোগিতা। আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে ভালোবাসি। আমি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে ভালোবাসি। তবে এখনও দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচ বাকি আছে। জুভেন্টাস যথেষ্ট ভালো দল। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম রোনালদোর সাথে আলফ্রেদো দি স্তেফানোর তুলনা শুরু করেছে। রোনালদোকে বলা হচ্ছে, ‘দি স্তেফানো টু’। রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত দি স্তেফানো-কেই সেরা ফুটবলার বলে মানা হয়। যে সিংহাসনে বসার দিকে এগিয়ে চলেছেন রোনালদো। শেষ ১৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ২৪টি গোল করেছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের হ্যাটট্রিকের দিকেও এগোচ্ছে তার দল।
রিয়াল মহাতারকা অবশ্য যথেষ্ট সতর্ক। বলছেন, এক পা, এক পা করে আমরা এগোতে চাই। জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচটা ছাড়া আর কিছু ভাবছি না।
বিশ্বজুড়ে প্রশংসার মাঝে অবশ্য একটা খোঁচাও ভেসে এসেছে। দুরন্ত সব গোল করার ক্ষেত্রে যার নাম প্রথম পাঁচ ফুটবলারের মধ্যে আসবে, সেই ইব্রাহিমোভিচ বলেছেন, রোনালদো গোলটা খারাপ করেনি। তবে আমি দেখতে চাই, চল্লিশ গজ দূর থেকে ও গোলটা করার চেষ্টা করছে। প্রায় ৪০ গজ দূরত্ব থেকেই ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে বাইসাইকেল কিকে গোল করেছিলেন ইব্রা!