নন-এমপিও শিক্ষকরা এবার রাজপথে
নিউজ ডেস্ক : সহকারী শিক্ষকদের পর এবার এমপিও ভুক্তির দাবিতে রাজপথে নেমেছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এখানে এখন তাদের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে হাজার।
তাদের দাবি— দীর্ঘ ১০ থেকে ১৫ বছর বিনাবেতনে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন তারা। এ কারণে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। তাই শিক্ষার মান ধরে রাখা যাচ্ছে না। এমপিও ভুক্তির ঘোষণা না আসা পর্যন্ত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
নাটোর জেলার বড়াইল উপজেলার কুমারখালী আহমদিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক লোকমান হাকিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি। এমপিও ভুক্তির ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা এখানেই থাকবো। কারণ দীর্ঘদিন ধরে আমরা বিনাবেতনে চাকরি করে আসছি। এখন আর পারছি না। আমাদেরও তো সংসার আছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমাদের। ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা নড়বো না। এমনকি ১ জানুয়ারি সারাদেশে বই উৎসবেও অংশ নেবো না।’
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার জানান, দেশের ৯৮ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও কারিগরি মাদ্রাসা। সবই বেসরকারি ব্যবস্থাপনা নির্ভর। এর মধ্যে বিভিন্ন স্তরে পাঁচ-ছয় হাজারের বেশি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্তির অপেক্ষায় আছে, যা এই স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক-চতুর্থাংশ।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেছেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে পাঠদানের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী। কিন্তু ১০-১৫ বছর ধরে তারা বিনাবেতনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসম্পন্ন শিক্ষাদান কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’
এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিও ভুক্ত করা না হলে সেগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবীর। তার ভাষ্য, ‘এগুলো বন্ধ হয়ে গেলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী বলেন, ‘১৯৮১ সালে আপনি যখন বাংলাদেশে আসেন, তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র হিসেবে কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে আপনাকে অভ্যর্থনা জানাতে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশের সব আন্দোলনে আপনার পেছনে সাক্ষী হিসেবে থেকেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এমপিও ভুক্তির জন্য আপনার সরকার থাকাকালে আমাদেরকে রাস্তায় নেমে আসতে হলো।’
এদিকে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষক-কর্মচারীরা প্ল্যাকার্ডে তাদের দাবিগুলো লিখে এনেছেন। এর মধ্যে এমপিও ভুক্তিসহ রয়েছে সহকারী শিক্ষকদের মতো বেতন, বাসা ভাড়া ও চিকিৎসা ব্যয় পাওয়ার দাবি।