g কোমর ভাঙার ৪০ দিন পর বের হলেন মেয়র | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

মঙ্গলবার, ১৭ই অক্টোবর, ২০১৭ ইং ২রা কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কোমর ভাঙার ৪০ দিন পর বের হলেন মেয়র

AmaderBrahmanbaria.COM
অক্টোবর ১২, ২০১৭
news-image

---

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : নিজের ঘরে পা পিছলে কোমর ভাঙার ৪০ দিন পর গতকাল বুধবার প্রথম ঘর থেকে বের হলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। লাঠিতে ভর দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে কালুরঘাট পর্যন্ত সড়কের সংস্কারকাজ সচক্ষে দেখেন মেয়র।

দীর্ঘ দেড় মাস বিছানায় থাকার কথা থাকলেও ৪০ দিন পরেই ঘর থেকে বের হয়ে দীর্ঘ যাত্রা করেন মেয়র। বেলা সাড়ে ১১টায় বাসা থেকে বের হয়ে বহদ্দারহাট টার্মিনাল হয়ে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত সড়কের বেহাল দশা সচক্ষে দেখেন। এ সময় তিনি সিটি করপোরেশনের সংস্কারকাজও পর্যবেক্ষণ করেন। সিটি মেয়রের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জাসদ একাংশের কার্যকরী সভাপতি মাঈনুদ্দিন খান বাদল।

সড়কটির বেহাল দশার কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় লোকজন আন্দোলন করে আসছিলেন। সড়কের একটি অংশে ওয়াসার পাইপলাইন স্থাপনের কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। বছরের পর বছর পাইপলাইন স্থাপন নিয়ে বিভিন্ন সময় আন্দোলনে নামে এলাকাবাসী। আর সড়কের আরেকটি অংশের অবস্থা আরো করুণ। সড়কে বড় বড় গর্তের কারণে লোকজনকে তীব্র কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।

সংসদ সদস্য মাঈনুদ্দিন খান বাদল জানান, ‘বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট সড়কের এতদিন মা-বাপ ছিল না। এখন রাস্তার বাবাকে খুঁজে পেয়েছি। মেয়র সড়ক দিয়ে শেষ সীমানা পর্যন্ত এসেছেন। সিটি করপোরেশন কথা রেখেছে।’ তবে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির কারণে সড়কের এ হাল হয়েছে বলে জানান তিনি। সিটি করপোরেশনের আধুনিক যন্ত্র দিয়ে খুব কম সময়ে এ সড়ক সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে আশা তাঁর।

সড়কের কাজ পরিদর্শনের পর কালুরঘাট তৈয়ব-নূর যাত্রীছাউনিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে নগরবাসীর যে অধিকার তা নিশ্চিত করতে যে পদক্ষেপ ও প্রকল্প গ্রহণ প্রয়োজন আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর তা করেছি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি, অনুমোদনও হয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা আছে। এ কারণে পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তুলতে পারছি না। সরকারের সহযোগিতা নিয়ে আমাদের তা করতেই হবে।

সিটি মেয়র আরো বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্স দাতাদের মধ্যে অসচ্ছল, দরিদ্র, কর প্রদানে সামর্থ্য নেই এমন ব্যক্তিদের গৃহকর সম্পূর্ণভাবে মওকুফ করা হবে। এ ছাড়া গৃহকর আপিলের সময় আরো এক মাস বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নগরবাসীকে আপিল করে হোল্ডিং ট্যাক্স সহনীয় করার সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

মেয়র নাছির বলেন, ‘গৃহকর নিয়ে যেভাবে কথাবার্তা বলা হচ্ছে এভাবে বলার প্রয়োজন ছিল না। আমরা একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। বিগত দিনেও এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। এটি একটি প্রাথমিক ধাপ।’ তিনি বলেন, ‘আমি অনিয়ম করার পক্ষপাতি নই। এখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। সরকারের বিধান অনুযায়ী, পাঁচ বছর অন্তর অন্তর অ্যাসেস করতে হয়। কর বিধি ১৯৮৬-এর বিধির আওতায় অ্যাসেসমেন্ট করা হয়েছে।’

সিটি মেয়র বলেন, গৃহকর যতটুকু সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করা যায় তা করা হবে। বিগত মেয়রের ১৩ হাজার আপিল তিনি নিষ্পত্তি করেছেন তাতে কোনো রকমের অভিযোগ নেই।

আ জ ম নাছির বলেন, সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে অ্যাসেসমেন্ট ও ইমারতের বার্ষিক মূল্য হোল্ডিং ট্যাক্স ও রেইট প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সঠিকভাবে উপস্থাপিত না হলে দুবার আপিলের মাধ্যমে করদাতার উপস্থিতিতে নিষ্পত্তি করা হবে।

মেয়র নাছির উদ্দীন বলেন, ‘গৃহকর নিয়ে আপিলের সময় আরো এক মাস বাড়ানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন দিয়েছে। হোল্ডিং ট্যাক্স দাতাদের মধ্যে যাদের কর দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাদের পুরোপুরিভাবে করের আওতামুক্ত করা হবে। আমি তো মনে করি এরপর আর কোনো কথা থাকার যুক্তি নেই। যারা গৃহকর দিতে পারবে না, বিগত দিনে যেগুলো দিতেন সেগুলোও মাফ করা হবে।’

গত ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন পা পিছলে কোমরে আঘাত পান। এতে তাঁর কোমরের একটি হাড় ভেঙে যায়।

এ জাতীয় আরও খবর